Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
পরপর পাকড়াও, ধন্দ মানুষখেকো নিয়েও

পাঁচে চার, ফাঁদে চিতাবাঘ

এ বার পায়ের ছাপ দেখে গুগল ম্যাপের সাহায্যে গতিবিধি চিহ্নিত করে নতুন করে একটি চিতাবাঘকে খাঁচাবন্দি করল বন দফতর। সোমবার মাদারিহাটের রামঝোরা চা বাগানের ৫ নম্বর সেকশনে পূর্ণ বয়স্ক ওই চিতাবাঘটি খাঁচাবন্দি হয়

পার্থ চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:০৫
Share: Save:

ফের নয়া পদ্ধতির ব্যবহার। ফের নয়া সাফল্য।

এ বার পায়ের ছাপ দেখে গুগল ম্যাপের সাহায্যে গতিবিধি চিহ্নিত করে নতুন করে একটি চিতাবাঘকে খাঁচাবন্দি করল বন দফতর। সোমবার মাদারিহাটের রামঝোরা চা বাগানের ৫ নম্বর সেকশনে পূর্ণ বয়স্ক ওই চিতাবাঘটি খাঁচাবন্দি হয়। এই নিয়ে পাঁচ দিনে চারটি চিতাবাঘ ধরা পড়ল। তবে এই চিতাবাঘটি মানুষখেকো কি না, তা নিয়ে কেউই নিশ্চিত নন। তবে আগে যে সব চিতাবাঘ ধরা পড়েছে, তাদের সঙ্গে এই চিতাবাঘটিকেও ‘মানুষখেকো’-র সন্দেহের তালিকায় রাখছেন বন দফতরের কর্তারা।

ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মাদারিহাটের বিভিন্ন চা বাগানে চিতাবাঘের আক্রমণ শুরু হয়। শেষ দুই মাসে ওই ব্লকের বিভিন্ন চা বাগানে চিতাবাঘের হানায় তিন শিশু-কিশোরের মৃত্যু হয়। জখম হন এক কিশোর ও এক বৃদ্ধ। একের পর এক চিতাবাঘের হামলার ঘটনায় গোটা এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায়। ক্ষোভেরও সৃষ্টি হয়। যার বহিঃপ্রকাশ হিসাবেই গ্যারগেন্দা চা বাগানে মাংস মেশানো বিষ খাইয়ে দু’টি চিতাবাঘকে মেরে ফেলা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

চিতাবাঘ-মানুষের এই সংঘাত ঠেকাতে মাদারিহাট ব্লকের বিভিন্ন চা বাগানে পনেরোটি খাঁচা পাতেন বন কর্তারা। কিন্তু বন দফতর সূত্রের খবর, চিতাবাঘের আক্রমণের ঘটনার জেরে বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজনা থাকায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছাড়াও ওই সব এলাকায় খাঁচা পাততে হচ্ছিল। তবে খাঁচায় একের পর এক চিতাবাঘ ধরা পড়তেই সেই পরিস্থিতি খানিকটা পাল্টায়। তারপরই মানুষখেকো চিতাবাঘটি ধরতে রীতিমতো পরিকল্পনা করে খাঁচা পাততে শুরু করেন বনকর্তারা।

বন দফতরের লঙ্কাপাড়া রেঞ্জের আধিকারিক বিশ্বজিৎ বিষই বলেন, “এই মুহুর্তে কোনও একটি এলাকায় চিতাবাঘের পায়ের ছাপ মিললে তা গুগল ম্যাপে ফেলা হচ্ছে। এবং সেখান থেকে পাওয়া তথ্যের উপর নির্ভর করে খাঁচা পাতা হচ্ছে। এর ফলে প্রতিদিনই গড়ে তিনটি-চারটি খাঁচার জায়গা পরিবর্তনও করা হচ্ছে। রামঝোরা চা বাগানের ৫ নম্বর সেকশনেও দু’দিন আগে জায়গা পরিবর্তন করে খাঁচা পাতা হয়। এ দিন তাতেই সাফল্য মেলে।” এর আগে রবিবার ভোরে খাঁচার ভিতরে মানব পুতুলের টোপ দিয়ে গ্যারগেন্দা চা বাগান থেকে একটি স্ত্রী চিতাবাঘকে ধরেছিল বন দফতর।

জলদাপাড়ার ডিএফও কুমার বিমল বলেন, “চা বাগান এলাকায় চিতাবাঘ ধরতে সব ধরনের পদ্ধতিই ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বনকর্মীরাও দিনরাত কাজ করে চলছেন। চা বাগান এলাকার বাসিন্দারা যত বেশি সেই কর্মীদের সহযোগিতা করবেন, তত বেশি তাঁরা আরও ভাল করে কাজ করতে পারবেন।”

এ দিকে, এ দিন ধরা পড়া চিতাবাঘটিকেও ‘মানুষ খেকো’ চিতাবাঘের সন্দেহের তালিকায় রাখছেন বন দফতরের কর্তারা। বন দফতর সূত্রের খবর, শেষ দুই মাসে মাদারিহাটে মোট আটটি চিতাবাঘ খাঁচাবান্দী করে দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ডিএফও বলেন, ‘‘খাঁচাবন্দি চিতাবাঘগুলির মধ্যে একাধিক চিতাবাঘের উপরেই আমাদের সন্দেহ রয়েছে। আচরণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Leopard Forest Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE