সতর্কতা: চূড়াভাণ্ডারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার মাঠে পুলিশ কুকুর দিয়ে তল্লাশি। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র
সকাল থেকেই দফায় দফায় বৈঠক চলছে। কোন পথে কীভাবে দলীয় সমর্থকদের নিয়ে যাওয়া হবে সেই ছক তৈরির কাজ শেষ। এমনকি তৃণমূলের ‘কড়াকড়ি’র ফাঁক গলে গাড়ি ভাড়া করার কাজও প্রায় শেষ বলে জানাচ্ছেন বিজেপি নেতারা।
আগামীকাল, শুক্রবার পাশের জেলা জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভায় কোচবিহার থেকে ৭০ হাজার মানুষ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতারা। বুধবার কোচবিহার জেলা দফতরে দলের সমস্ত মণ্ডল কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন কোচবিহারের জেলা বিজেপি সভানেত্রী মালতী রাভা। পরে তিনি বলেন, “এই জেলা থেকে প্রধানমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার জন্য মানুষ উদগ্রীব হয়ে উঠেছেন। তৃণমূলের বাধায় অনেকেই যাওয়ার সাহস করছেন না। তারপরেও ৭০ হাজার মানুষ নিয়ে যাওয়া হবে।”
রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূলের সংঘাত এখন চরমে। সেই রেশ পড়েছে কোচবিহারেও। কলকাতায় সিবিআই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থানের পরে ওই লড়াই আরও বেড়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন দু’দলের কর্মীরাই। এই অবস্থায় শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় জমায়েতের উপর জোর দিয়েছে বিজেপি। জলপাইগুড়ি জেলা তো বটেই আশেপাশের সমস্ত জেলা কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর থেকে প্রচুর পরিমাণে সমর্থকদের মাঠে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। বিজেপির অবশ্য অভিযোগ, তৃণমূল নানা জায়গায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। বাস বা গাড়ি কেউ যাতে কেউ না দেন সে ব্যাপারে মালিকদের হুঁশিয়ারি করে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি বিজেপি নেতাদের। তৃণমূল অবশ্য ওই অভিযোগ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “দিন কয়েক আগেই বিজেপি নেতা রাজনাথ সিংহ সভা করেছেন মাথাভাঙায়। গোটা জেলা থেকে তিন হাজার মানুষ সেখানেও যোগ দেননি। কেউ কেউ হেলিকপ্টার দেখতে গিয়েছিল। তাই বিজেপি নিয়ে বেশি বলার কিছু নেই।”
গত লোকসভা উপনির্বাচনে কোচবিহার লোকসভা আসনে বামেদের পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে বিজেপি। এই অবস্থায়, আগামী লোকসভায় কোচবিহারকে পাখির চোখ করে এগোতে শুরু করে বিজেপি। প্রথমদিকে তা নিয়ে অনেকটা আশাবাদী হয়ে ওঠে। গত ৭ ডিসেম্বর কোচবিহারের ঝিনাইডাঙা থেকে রথযাত্রা শুরু করার কথা ছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের। শেষ পর্যন্ত আদালতের রায়ে তা হয়নি। তার পর থেকেই কোচবিহারের বিজেপি কর্মীদের একটি অংশ হতাশ হয়ে পড়েছিলেন বলে দল সূত্রেই খবর। রাজনাথ সিংহের সভার পরে পাশের জেলায় প্রধানমন্ত্রীর সভা থেকে ওই হতাশা কাটিয়ে কর্মীরা নতুন উদ্যমে ফের ময়দানে নামবে এই আশা করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির এক নেতার কথায়, “তৃণমূলের একটা আতঙ্ক রয়েছে সাধারণ কর্মীদের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রীর সভার পরে তা অনেকটাই কেটে যাবে। তাহলেই এই আসন নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক নেতা অবশ্য বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে সামনে থেকে দেখতে অনেকে যাবেন। অনেকেই তিনি কী বলেন তা শুনতে যেতে পারেন। অনেকে হেলিকপ্টার দেখতে যাবেন। তাতে কোনও লাভ হবে না। কারণ বিজেপিকে এখন মানুষ চাইছে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy