Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

দিনেদুপুরে গুলি, খুন

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বছর পনেরো আগে গৌতমবাবুর উদ্যোগেই ডাউয়াগুড়ি বাজারে একটি ক্লাব তৈরি হয়। কয়েক বছরের মধ্যেই ওই ক্লাবের সদস্যদের কয়েকজন ঠিকাদারি জিনিসপত্র সরবরাহ, তোলাবাজি, জমির ব্যবসার টাকাপয়সা ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে বচসায় জড়িয়ে পড়ে।

আতঙ্ক: পড়ে রয়েছে গৌতমবাবুর দেহ। নিজস্ব চিত্র

আতঙ্ক: পড়ে রয়েছে গৌতমবাবুর দেহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০২:১২
Share: Save:

তখনও বাজারে যথেষ্ট ভিড়। আচমকা পরপর গুলির শব্দ। আতঙ্কে ছুটতে শুরু করেন লোকজন। জাতীয় সড়কের ধারে লুটিয়ে পড়ে এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ। বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার ডাউয়াগুড়ি বাজারে।

পুলিশ জানায়, মৃতের নাম গৌতম সরকার (৩৬)। বাজারের পাশেই তাঁর বাড়ি। তাঁর মুখে, দেহে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে। পরিকল্পিত ভাবেই ওই যুবককে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। ঘটনার পর বাইকে চেপে আসা তিন দুষ্কৃতী কোচবিহার শহরের দিকের রাস্তা ধরে পালিয়ে যায়। সব মিলিয়ে ১১ রাউন্ড গুলি চালানো হয়। যে যুবক খুন হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে খুন, তোলাবাজি সহ একাধিক মামলা রয়েছে কোতোয়ালি থানায়। পুলিশের সন্দেহ, অপরাধমূলক কাজ নিয়ে বচসা থেকেই এমন ঘটনা ঘটেছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।”

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বছর পনেরো আগে গৌতমবাবুর উদ্যোগেই ডাউয়াগুড়ি বাজারে একটি ক্লাব তৈরি হয়। কয়েক বছরের মধ্যেই ওই ক্লাবের সদস্যদের কয়েকজন ঠিকাদারি জিনিসপত্র সরবরাহ, তোলাবাজি, জমির ব্যবসার টাকাপয়সা ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। চার বছর আগে ওই ক্লাবের সদস্য শুভঙ্কর সরকার নামে এক যুবক খুন হন। বছর দু’য়েক আগে রঞ্জিত মল্লিক নামে ওই ক্লাবেরই আর এক সদস্য খুন হন। ওই খুনে নাম জড়ায় গৌতমবাবুর। তা নিয়ে মামলাও চলছে। স্থানীয় তৃণমূলের নেতারা জানিয়েছে, রঞ্জিতবাবু খুন হওয়ার পরে ওই ক্লাবে তালা ঝুলিয়ে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গৌতমবাবু সে সময় এলাকা ছেড়ে দিয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি এলাকায় ফেরেন।

এ দিন ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় অসমের দিক থেকে বাইকে চেপে আসা তিন যুবক গৌতমবাবুর সামনে দাঁড়িয়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। তার মধ্যে অন্তত পাঁচটি গুলি দেহ ভেদ করে বেরিয়ে যায়। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান চন্দন কার্জী বলেন, “আমি সে সময় বাজারের রাস্তা ধরে যাচ্ছিলাম। গুলির শব্দ শুনে গিয়ে দেখি গৌতমের দেহ পড়ে রয়েছে।” আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। ঘটনাস্থলে যান কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেন, “এমন ঘটনার পিছনে কারা রয়েছে, তা পুলিশের তদন্তে বের হয়ে আসবে। আশা করছি খুব দ্রুত অপরাধীরা গ্রেফতার হবে। এলাকার সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা নিরাপদে কাজকর্ম করতে পারেন, সে বিষয়টি পুলিশকে দেখতে বলা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Muder Public Cooch Behar কোচবিহার
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE