Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বয়ঃসন্ধির পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াচ্ছে ‘সতীর্থরাই’

‘স্যানিটারি ন্যাপকিন’ নিয়ে ডুয়ার্সের স্কুলের মেয়েদের মধ্যে কর্মশালার প্রস্তুতি নেন। চিন্তাভাবনা মতো কাজও হয়।

একজোট: কর্মশালায় স্কুলপড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

একজোট: কর্মশালায় স্কুলপড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:১১
Share: Save:

অক্ষয়কুমার অভিনীত ‘প্যাডম্যান’ ছবি দেখে মেয়েদের বয়ঃসন্ধির সমস্যা ভাবিয়ে তুলেছিল রেভেকা সেনাপতি, স্বরূপা ঘোষ, অন্তরা দাশগুপ্ত আর পাঞ্চালী সিংহ। মালবাজারের দু’টি স্কুলের এই প্রাক্তনীরা, তাঁদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সতীর্থ’র মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করতে নিজেদের কাজের পরিধি আরও বড় করার কথা ভাবেন।

‘স্যানিটারি ন্যাপকিন’ নিয়ে ডুয়ার্সের স্কুলের মেয়েদের মধ্যে কর্মশালার প্রস্তুতি নেন। চিন্তাভাবনা মতো কাজও হয়। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়- আরশি (অ্যাডোলেসেন্ট রিপ্রোডাক্টিভ অ্যান্ড সেক্সুয়াল হেলথ ইনগরেশন। গত মঙ্গলবার ওদলাবাড়ির সুনীল দত্ত স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয় এবং আদর্শ হিন্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে দুটি কর্মশালা হয়েছে।

এক হাজার ছাত্রীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাড়িতে হাতেকলমে প্যাড তৈরি থেকে তা ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা বোঝানো হয়। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির ওই মেয়েদের জড়তা কাটাতে অডিও ভিস্যুয়ালে বিভিন্ন তথ্যের সঙ্গে অক্ষয় কুমারের প্যাডমানের প্রসঙ্গও টেনে আনা হয়। পরিচ্ছন্ন সূতির কাপড় বা ফানেলের কাপড় দিয়ে কীভাবে প্যাড তৈরি করা যায়, তা হাতেকলমে দেখানো হয়। স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞরাও ছিলেন। মেয়েদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ১ হাজার স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্যাকেট। সংগঠনের সম্পাদক গৌতম বিশ্বাস, সভাপতি সুশান্ত দত্ত’রা জানান, স্কুলের ছেলেমেয়েদের পাশে দাঁড়ানোটাই আমাদের লক্ষ্য। সেটা স্কুলের পরিকাঠামোগত দিক হতে পারে, আবার স্বাস্থ্য বা ব্যক্তিগত সাহায্যের দিকও হতে পারে। মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালীন বিষয়টি মারাত্মক। নানা কুসংস্কার, জড়তা জড়িয়ে থাকে। সেই জায়গাটা নিয়েই আমরা কাজ করছি। এর পরে চা বাগিচা এলাকার মেয়েদের নিয়ে কাজ করার চিন্তাভাবনা আছে।

সতীর্থের সদস্যরা কেউ ইঞ্জিনিয়র, কেউ শিক্ষক, কেউ ব্যবসায়ী, আবার কেউ পুলিশ অফিসার। বছর দুয়েক আগে শিকড়ের টানে ওঁরা এক ছাতার তলায় এসেছেন। গড়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। মালবাজার আদর্শ বিদ্যালয় বা সুভাষিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ৫০ জন প্রাক্তনী ছোটবেলার স্মৃতি ঘেরা ডুয়ার্সের প্রাণকেন্দ্র মালবাজারের দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানো শুরু করেন। প্রথমে দুঃস্থদের বইপত্র, পরে স্কুলে চেয়ার টেবিলও দেওয়া হয়। কর্মসূত্র বা নানা কারণে বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকলেও স্কাইপে নিয়মিত বৈঠক চলে সদস্যদের।

কলকাতার বাসিন্দা চায়না নাগ বলেন, ‘‘প্রত্যন্ত এলাকায় মেয়েদের মধ্যে প্যাডের ব্যবহার বা স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে ঠিকঠাক চিন্তাধারা তৈরি হয়নি। এতে মানসিক সমস্যা ছাড়াও বিভিন্ন রোগের সম্ভাবনাও থাকে। আমরা সেই জায়গাটা ধরেই কাজ করার চেষ্টা করছি। ছেলেমেয়েদের সামগ্রিক বিকাশ করাটাই আমাদের লক্ষ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE