রক্তাক্ত অবস্থায় এক বন্দিকে উদ্ধার করা হল জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের শৌচাগার থেকে। শুক্রবার রাতের ঘটনা। তাকে প্রথমে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। এ দিকে সংশোধনাগারের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় বন্দি উদ্ধার হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও।
সংশোধনাগার সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বিচারাধীন ওই বন্দির নাম রাজকুমার বিশ্বাস। এনজেপি থানা এলাকার বাসিন্দা রাজকুমার ডাকাতির অভিযোগে অভিযুক্ত। ২৬ জুন থেকে সে এই সংশোধনাগারে রয়েছে। শুক্রবার রাতে তাকে বাথরুমের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন কারারক্ষীরা। গলায় ক্ষত ছিল তার। তৎক্ষণাৎ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান তার গলায় গভীর ক্ষত রয়েছে।
কিন্তু কীভাবে রাজকুমারের এই অবস্থা হল তা স্পষ্ট করে বলতে পারেনি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।
সংশোধনাগারের জেলার রাজীব রঞ্জন জানিয়েছেন, ওই যুবক মাদক আসক্ত। জেলারের দাবি, “জেলের ভিতর নেশার সামগ্রী না পেয়ে ছটফট করত। যদিও শৌচাগারে গিয়ে কীভাবে সে রক্তাক্ত হল তা এখনও জানা যায়নি।” ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। জেলের ভিতর কোনও মাদকাসক্ত বন্দি থাকলে তাকে সামলাতে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয় তা যথাযথ নেওয়া হয়েছিল কিনা সে প্রশ্নও উঠেছে। জখম বন্দি নিজেই নিজেকে আঘাত করেছিল নাকি, অন্য কেউ আঘাত করেছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিক তদন্তে কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ঘটনায় অন্য কোনও বন্দির জড়িত থাকার প্রমাণ নেই।
জেল কর্তৃপক্ষ যাই দাবি করুক না কেন, বন্দিদের পরিজনদের একাংশের দাবি, জলপাইগুড়ি জেলের ভিতরে টাকা দিলেই মাদক মেলে। মাদক কেনা নিয়ে কোনও গোলমাল হয়েছিল কিনা সে দিকও খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে বন্দিদের পরিজনদের থেকে। রাজকুমার বিশ্বাস কোনও বন্দির সঙ্গে বচসা বা মারপিটে জড়িয়ে পড়েছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে।
মাস ছয়েক আগেই জলপাইগুড়ি জেলের ভিতর থেকে সাড়ে তিনশো গ্রাম গাঁজা উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয়েছিল ২৫টি মোবাইল ফোন এবং একটি ছুরিও। খোদ কারাবিভাগের অতিরিক্ত আইজি পরিদর্শন করে জেল থেকে নেশার সাগ্রী, মোবাইল উদ্ধার করেছিলেন। গত বছর মারপিটে এক বন্দির মৃত্যুর অভিযোগও উঠেছিল জলপাইগুড়ি জেলে। তারপরেও গত শুক্রবারের ঘটনা জেলের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy