Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশের সামনেই ধমকাচ্ছেন সুমতি

জ্যোতিনগরের বাড়িটির চার তলার ছাদে ভাড়াটেদের জামা-কাপড় মেলা নিষেধ ছিল। সেখানে সুরজিতের পোষা ডোবারম্যান ‘জ্যাকি’কে রাখা হত।

তদন্ত: আটকদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

তদন্ত: আটকদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:০৭
Share: Save:

পুলিশের সামনেই ধর্ষিত ও খুন হওয়া শিশুর বাবা-মাকে ধমকে চুপ করানোর চেষ্টা করলেন ধৃতের মা সুমতি সরকার। এই ঘটনায় বিস্মিত তদন্তকারীরা। সোমবার দুপুরে শিলিগুড়ি মহিলা থানার ঘটনা।

সেখানে দু’ঘণ্টা সুমতিদেবীকে জেরা করেন অফিসারেরা। সেই সময়ে নিহত শিশুর বাবা-মাকেও ডাকা হয়েছিল। তখনই তাঁরা অভিযোগ করেন, শিশুটিকে যে চাদরের উপরে শোওয়ানো ছিল তা সুমতিদেবী পুড়িয়েছেন। তখনই সুমতি তাঁদের ধমকে চুপ করাতে চান বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রের দাবি, তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন সুমতিদেবী। গোটা প্রক্রিয়াটি পুলিশ ভিডিও রেকর্ডিং করিয়েছে। বিকেলে আরেক দফায় অভিযুক্তের মা ও বৌদিকে জেরা করা হয়েছে। ভক্তিনগর থানায় আলাদাভাবে জেরা করা হয়েছে অভিযুক্ত সুরজিতকেও।

জ্যোতিনগরের বাড়িটির চার তলার ছাদে ভাড়াটেদের জামা-কাপড় মেলা নিষেধ ছিল। সেখানে সুরজিতের পোষা ডোবারম্যান ‘জ্যাকি’কে রাখা হত। কুকুরের ভয়ে ভাড়াটেদের কেউ সেখানে যেতেন না। তাই সেখানে যে মেয়ে যেতে পারে তা প্রথমে ভাবেননি ওই দম্পতি। পরে সুমতিদেবীর কথা মত ওই জায়গা থেকেই দেহ উদ্ধার হয়। যে চাদরের উপরে শিশুর দেহ শোয়ানো ছিল, সেটি যে ‘জ্যাকি’র শোওয়ার চাদর তা সুমতিদেবীই জানান। কিন্তু তাঁর দাবি, চাদরটি পোড়ানো হয়নি। কিন্তু সেই চাদর কোথায় রয়েছে তা তিনি জানেন না বলে দাবি করেছেন। অফিসারদের সন্দেহ, বাড়ির ফাঁকা তিনতলায় টাকা দিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে শিশুটির উপর যৌন নির্যাতন হয়। মেয়েটি চিৎকার করায় তার গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মারা হয়। গোটা বাড়ির লোকজনকে বিভ্রান্ত করতে প্রথমে এলাকায় মাইক দিয়ে খুঁজতে বার করিয়ে দেওয়া হয়।

তদন্তকারীরা জানান, সেই ফাঁকে দেহটি লোপাট করার চেষ্টা বা পরিকল্পনা হয়েছিল কিনা তা দেখা শুরু হয়েছে। পড়শিরা রাস্তায় নেমে পড়ায় তা সম্ভব হয়নি বলে মনে করছে পুলিশ। রাতের অন্ধকারে চাদরে মোড়ানো দেহটি কোথাও নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও ছিল বলে ধারণা পুলিশের। কারণ, শিশুর দেহটি মোবাইলের টাওয়ারের ছাদে এমনভাবে রাখা ছিল, তা কারও নজরেই পড়েনি। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘অনেক ব্যাপারই সন্দেহজনক। কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিচ্ছি না।’’

এ দিন দুপুরে ভক্তিনগর থানায় গিয়ে শিশুটির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, নিরাপত্তা ছাড়াও দোষীদের শাস্তির দাবি তোলেন বিহারী কল্যাণ মঞ্চের সদস্যরা। সন্ধ্যার আগে মিছিল করে থানায় গিয়ে একই দাবি তোলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police rape victim Accused
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE