প্রতীকী ছবি
করোনা আবহে কয়েকমাস ধরে লকডাউনের জেরে দেশের আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ হবে, এমন ইঙ্গিত সব মহলেই রয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন দারিদ্র বেড়ে যেতে পারে, তেমনি বাড়তে পারে নারী পাচার এবং বাল্য বিবাহও। এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে জোর দিয়েছে কোচবিহার জেলা পুলিশ।
ইতিমধ্যেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কে তা নিয়ে প্রচারও শুরু হয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আবেদন রেখে জানানো হয়েছে, লকডাউন আবহে এবং আমপান বিপর্যয়ের পরে মুখ্যমন্ত্রী বাংলাকে নতুন করে গড়ে তুলতে চাইছেন। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দালাল চক্রগুলি সক্রিয় হতে পারে নারী পাচারে। পাশাপাশি, বাড়তে পারে বাল্য বিবাহের মতো নানা অপরাধও। এই লড়াইয়ে জেলা পুলিশ সাধারণ মানুষ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে পাশে থাকার আবেদন জানিয়েছেন। ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ প্রকল্পের কথাও সেখানে তুলে ধরা হয়েছে। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর রবিবার বলেন, “সারা বছর ধরেই এই প্রচার আমরা করে থাকি। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সেই প্রচার বেশি করে তুলে ধরা হয়েছে।”
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলা কোচবিহার। একসময়ে এই জেলায় নিয়মিত নারী পাচার ও বাল্য বিবাহের অভিযোগ উঠত। জেলা পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলি থেকে গরিব পরিবারের মেয়েদের কখনও বিয়ের টোপ দিয়ে, কখনও কাজের টোপ দিয়ে ভিন রাজ্যে পাচার করে দেওয়া হত। জেলায় একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সেই সময় থেকেই টানা সীমান্ত লাগোয়া এলাকার মানুষদের সচেতন করতে প্রচার করেছে। একই ভাবে বাল্যবিবাহ ছিল গ্রামে গ্রামে নিয়মিত ঘটনা। সেই কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রশাসন, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সংগঠন লাগাতার প্রচার করায় সেই পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে যায়। জেলা প্রশাসনের দাবি, বর্তমানে নারী পাচারের অভিযোগ হাতে গোনা। বাল্য বিবাহের অভিযোগ কিছু ক্ষেত্রে উঠলেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
কোচবিহারের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বক্তব্য, টানা লকডাউনের ফলে নিম্নবিত্ত মানুষদের হাতে টাকা-পয়সা কমে এসেছে। জমানো টাকা দিয়ে আর কতদিন চলবে, সেই চিন্তাও আছে। এর পরেও সেই নিম্নবিত্ত লোকজন কাজ না পেলে সেটা সত্যিই চিন্তার বিষয়। ওই পরিস্থিতিতে নারী পাচার ও বাল্য বিবাহের মতো ঘটনা ঘটার প্রবল আশঙ্কা থেকেই যায়। সেটা লক্ষ রাখতে হবে সবাইকেই। ওই সংগঠনের সম্পাদক মইনুল হক এ দিন বলেন, “আমরা দীর্ঘসময় ধরে ওই বিষয়ে কাজ করছি। পুলিশ-প্রশাসনের পাশে সবসময় থাকব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy