Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

এ বার শহরেও

ছেলেধরা সন্দেহে আট দিনে ছ’টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে মালদহে। আক্রান্তদের মধ্যে এক জনের মৃত্যুও ঘটেছে। ঘটনা শুধু গ্রামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, শুক্রবার ইংরেজবাজার শহরেও দেখা গিয়েছে একই ছবি। ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা অব্যাহত থাকায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের।

জখম যুবক। নিজস্ব চিত্র

জখম যুবক। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০৩:৩৭
Share: Save:

ছেলেধরা সন্দেহে আট দিনে ছ’টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে মালদহে। আক্রান্তদের মধ্যে এক জনের মৃত্যুও ঘটেছে। ঘটনা শুধু গ্রামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, শুক্রবার ইংরেজবাজার শহরেও দেখা গিয়েছে একই ছবি। ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা অব্যাহত থাকায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের।

এক সপ্তাহ আগে প্রথম ছেলে ধরা সন্দেহে এক দম্পতিকে মারধরের ঘটনা ঘটে হবিবপুর ব্লকের ছাতিয়ানগাছির স্কুল পাড়া গ্রামে। এর পরে হবিবপুরে লাগাতার চলেছে গণপিটুনি। আগের পাঁচটি গণপিটুনির মধ্যে সবক’টাই হবিবপুরে। বুধবার একজনের মৃত্যুও হয়েছে। এবার ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনাটি ঘটেছে খোদ ইংরেজবাজার শহরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের অরবিন্দ পার্ক এলাকায়। ছ’টি ঘটনার মধ্যে চারটি ঘটনাতেই আক্রান্ত হয়েছেন মানসিক ভারসাম্যহীনেরা।

কীভাবে ছড়াচ্ছে ছেলে ধরার গুজব? স্থানীয় সূত্রে খবর, সোশ্যাল মিডিয়ার একটি বার্তা ছড়াচ্ছে। সেখানে বলা হচ্ছে, ভিন রাজ্য থেকে কিছু মানুষ ঢুকেছে। এরা মহিলা ও শিশুদের চুরি করে কিডনি বের করে নিচ্ছে। এরই জেরে অচেনা কাউকে দেখলেই কিছু মানুষ উত্তেজিত হয়ে আটক করে নিচ্ছে। তার পরেই শুরু হচ্ছে গণপিটুনি।

মনোবিদ, সমাজতত্ত্ববিদরা বলছেন, স্থানীয় ভাবে সালিশি করার প্রবণতাটিই আগে বন্ধ করতে হবে। কাউকে ‘দোষী’ ধরে নিয়ে তাঁকে ‘শাস্তি’ও দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সমাজতত্ত্ববিদ কৃষ্ণা গুহ বলেন, “সমাজের কিছু তথাকথিত ‘দাদা’ রয়েছেন। এমন ঘটনায় দাদাগিরি দেখানোর সুযোগ পেয়ে দুর্বলের উপরে অত্যাচার চালান তাঁরা। শুধু পুলিশ প্রশাসনকে দুষলে হবে না। আমাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।” উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নির্মল বেরা বলেন, “পুলিশ প্রশাসনের উচিত, এমন ধরনের ঘটনা রুখতে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া। ক্লাব, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাদেরও কাজে লাগানো উচিত।”

বাসিন্দাদের ক্ষোভ, শুরুর দিকে পুলিশ গণপিটুনির ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যদিও এখন পুলিশ অতি সক্রিয়। পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “গণপিটুনির ঘটনা ঘটলেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবতোষ মণ্ডলের কথায়, “অনেককে সচেতনতার কাজে নামিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lynching Rumours Child Lifter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE