Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিক্ষোভ মিটলে কাঁদলেন উপাচার্য, পড়ুয়ারা

পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক ঘেরাও ছিলেন ২৮ ঘণ্টা। আর উপাচার্য ঘেরাও থাকলেন ৪৮ ঘণ্টা।অভিযোগ, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের বাংলা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের নম্বর বাড়ানোর দাবিতে লাগাতার ঘেরাও আন্দোলনের জেরে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

ঘেরাও ওঠার পরে পড়ুয়াদের সঙ্গে উপাচার্য গোপাল মিশ্র। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়

ঘেরাও ওঠার পরে পড়ুয়াদের সঙ্গে উপাচার্য গোপাল মিশ্র। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১২
Share: Save:

পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক ঘেরাও ছিলেন ২৮ ঘণ্টা। আর উপাচার্য ঘেরাও থাকলেন ৪৮ ঘণ্টা।

অভিযোগ, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের বাংলা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের নম্বর বাড়ানোর দাবিতে লাগাতার ঘেরাও আন্দোলনের জেরে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের আড়ালে কি শাসক দলের এক গোষ্ঠীর হাত রয়েছে—তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি অম্লান ভাদুড়ি এবং বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের উপস্থিতিই আন্দোলনে রাজনৈতিক যোগ আরও স্পষ্ট হল বলে দাবি কর্তৃপক্ষদের একাংশের। তাঁদের প্রশ্ন, বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও আন্দোলন প্রত্যাহারে রাজি হননি বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা। আর নেতাদের মিনিট দশেকের আলোচনাতেই আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিলেন তাঁরা। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য শাসক দলের একাংশ আড়াল থেকে পড়ুয়াদের আন্দোলনকে মদত দিচ্ছিলেন বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ পদস্থ এক কর্তা। যদিও উপাচার্য গোপাল মিশ্র এই বিষয়ে মন্তব্য করতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক বিষয়ে কিছু বলব না। তবে সকল ছাত্রছাত্রীই আমার সন্তানের মতো।’’

মাস তিনেক আগে ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। তৃণমূলের জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ নেতা বিশ্বজিৎ রায় ওরফে বুলেট এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর অনুগামী তথা ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাসের অনুগামীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। সেই সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্বজিৎবাবুর অনুগামীরা বহিরাগত থাকায় ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিলেন তাঁরা। ওই ঘটনায় প্রসেনজিৎ দাসের অনুগামীদের দখলে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ ইউনিট ভেঙে দেন কর্তৃপক্ষ।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজো নিয়ে বাংলা বিভাগের একাংশ পড়ুয়াদের সঙ্গে বিরোধ হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। যার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পুজো করার ছাড়পত্র দেননি কর্তৃপক্ষ। তবে বাংলা বিভাগের ওই পড়ুয়াদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পুজো করার অনুমতি দিয়েছিলেন ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষ। এমনকী, তাঁদের পাশে থাকতে দেখা গিয়েছিল যুব তৃণমূলের নেতা কর্মীদের। এ দিনও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলতে সেই একই নেতারা হাজির হওয়ায় উঠছে প্রশ্ন। তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ছাত্র আন্দোলন করতে হলে প্রয়োজন ছাত্র-ছাত্রীদের। তাই বাংলা বিভাগের একাংশ পড়ুয়াকে সামনে রেখে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে দলেরই একাংশ নেতৃত্ব।

নীহারবাবু, অম্লানবাবুরা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কারণে নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তির পরিবেশ তৈরি করার জন্য এদিন আমরা সকলে মিলে গিয়েছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chancellor Students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE