Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পুড়িয়ে খুনের চেষ্টা মহিষকুচিতে

শনিবার তৃণমূল অভিযোগ তোলে, বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে দলের মহিষকুষির বুথ সভাপতি মহিরুদ্দিন মিয়াঁ ওরফে মেহের আলিকে খুনের চেষ্টা করে বিজেপি কর্মীরা।

আহত: হাসপাতালে মহিরুদ্দিন মিয়াঁ। নিজস্ব চিত্র

আহত: হাসপাতালে মহিরুদ্দিন মিয়াঁ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৮ ০২:৪৯
Share: Save:

এক তৃণমূল নেতাকে রাস্তায় আটকে গায়ে পেট্রল ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগে উত্তপ্ত তুফানগঞ্জের মহিষকুচি গ্রাম। রবিবার সকালে ওই গ্রামে বিজেপির দুই নেতার বাড়িতে তৃণমূল হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ওই দু’জনকে মারধর করে তাঁদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়।

শনিবার তৃণমূল অভিযোগ তোলে, বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে দলের মহিষকুষির বুথ সভাপতি মহিরুদ্দিন মিয়াঁ ওরফে মেহের আলিকে খুনের চেষ্টা করে বিজেপি কর্মীরা। শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে অ্যাসিড ছুড়ে দেওয়ার অভিযোগও তোলা হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, অসম থেকে দুষ্কৃতীদের নিয়ে এসে বিজেপি মহিরুদ্দিনের উপরে হামলা করেছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তলাশি চলছে।”

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “অসম লাগোয়া এলাকায় বিজেপি ছক কষে গণ্ডগোলের চেষ্টা করছে। মহিরুদ্দিনকে আগের থেকেই টার্গেট করে রাখা হয়। কিন্তু এই অবস্থা কেউ মেনে নেবে না।” তৃণমূলের জেলার সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদও অভিযোগ করেন, ওই ঘটনার পিছনে অসমের দুষ্কৃতীদের হাত রয়েছেন। তিনি বলেন, “ভোটের আগে থেকেই আমরা বিজেপির অসম যোগের কথা বারবার বলেছি। এ বারে তা প্রমাণিত হল। এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি করতেই ওই ঘটনা।” বিজেপি অবশ্য দাবি করেছে, সালিশির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে তৃণমূলের দুই নেতার মধ্যে বচসার জেরে ওই ঘটনা ঘটেছে।

বিজেপির কোচবিহার জেলার সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে অভিযোগ করেন, ‘‘ওই এলাকায় এক মহিলার সঙ্গে এক ব্যক্তির সম্পর্ক নিয়ে দিন কয়েক আগে একটি সালিশি সভা হয়। সেখানে তৃণমূলের চার জন নেতা ছিলেন। তাঁর মধ্যে একজন মহিরুদ্দিন মিয়াঁ। ওই সভায় অভিযুক্তের ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই টাকা চার নেতার ভাগ করে নেওয়ার কথা ছিল। টাকা ছিল মহিরুদ্দিন মিয়াঁর কাছে। একজন ওই টাকা পাননি। তাঁর সঙ্গেই ওই গণ্ডগোলে ওই ঘটনা ঘটে।’’ তিনি বলেন, “কে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে তা সবাই জানেন। পুলিশের কাছেও তাঁর নাম আছে। তাঁকে গ্রেফতার করলেই পুরো বিষয় পরিষ্কার হবে। আমাদের নেতাদের নামে মিথ্যে মামলা দেওয়া হচ্ছে।”

মহিরুদ্দিনের আত্মীয়রা অবশ্য বিজেপির দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা অভিযোগ তুলেছে বিজেপিরই বিরুদ্ধে।

এ দিন সকালে শাসক দলের কয়েকশো লোক জড়ো হয়ে মিছিল শুরু করে মহিষকুচি বাজারে। গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটে ওই এলাকায় তৃণমূল জয়ী হয়। বিজেপির হয়ে যারা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁদের বাড়ির উপরে হামলা হয় বলে অভিযোগ। বিজেপির ভবেন বর্মন ও হেভেন বর্মনের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। ওই দু’জনকে ঘর থেকে বের করে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “মূল অভিযুক্তের নাম পাওয়া গিয়েছে। খুব শীঘ্রই গ্রেফতার হবে। গণ্ডগোল যাতে না ছড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE