Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বিকল্প পদ্ধতির চিকিৎসায় বাঁচল সাপে-কাটা শিশু

তপন থানার মহাদেবপুর এলাকার রুবেল সরকারের ছেলে সাকিলকে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে সাপ কামড়ায়। বিষয়টি সাকিলের পরিবারের কেউ খেয়াল করেননি। শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে পর দিন সকালে তপন গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান বাবা-মা

মায়ের কোলে সাকিল। নিজস্ব চিত্র

মায়ের কোলে সাকিল। নিজস্ব চিত্র

অনুপরতন মোহান্ত
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৫৫
Share: Save:

সাপের কামড়ে মরণাপন্ন আড়াই বছরের এক শিশুকে বিকল্প পদ্ধতিতে চিকিৎসা করে বাঁচিয়ে তুলল বালুরঘাট হাসপাতাল। শিশু বিশেষজ্ঞ সমীরণ পুরকাইতের সাহসী সিদ্ধান্তে প্রায় সাত ঘণ্টার চেষ্টায় নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে সাকিল সরকারকে ফিরে পেলেন বাবা-মা। পরিবারের সঙ্গে খুশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

তপন থানার মহাদেবপুর এলাকার রুবেল সরকারের ছেলে সাকিলকে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে সাপ কামড়ায়। বিষয়টি সাকিলের পরিবারের কেউ খেয়াল করেননি। শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে পর দিন সকালে তপন গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান বাবা-মা। তখনই তাটিকে বালুরঘাট হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সাকিলের শ্বাসপ্রশ্বাস তখন প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হাসপাতাল সুপার তপন বিশ্বাসের কথায়, ‘‘শিশুটি শ্বাস নেওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল। লাইফ সাপোর্টের মাধ্যমে হৃদস্পন্দন চালিয়ে রেখে চিকিৎসার পরিকাঠামো আমাদের হাসপাতালে নেই। এই অবস্থায় সমীরণবাবু ও অন্য ডাক্তাররা ‘ম্যানুয়াল’ পদ্ধতিতে হৃদস্পন্দন চালু রেখে শিশুটিকে অ্যান্টিভেনম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সাহসী ও বিকল্প চিকিৎসাতেই বেঁচে ওঠে শিশুটি।’’ বাচ্চাটির বাবা রুবেল বলেন, ‘‘আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ডাক্তারবাবুর চেষ্টায় ওকে ফিরে পেলাম।’’

শিশু বিশেষজ্ঞ সমীরণবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতালের ওয়ার্ডে গিয়ে দেখি, তত ক্ষণে শিশুটির শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। কথাও বলতে পারছিল না। চোখের পাতা পড়ে আসছিল। খানিক ক্ষণ পরে শিশুটি শ্বাস নেওয়াই বন্ধ করে দেয়। এন্ডোট্র্যাকিয়াল ইনটিউবেশনের সঙ্গে ব্যাগ টিউব সাপোর্ট দিয়ে কৃত্রিম উপায়ে শিশুটির শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখা হয়।’’

হাসপাতাল সূত্রের খবর, সকাল ১১টা থেকে চিকিৎসা চালানোর পরে বিকেল সাড়ে ৬টা নাগাদ শিশুটি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে। শনিবার সমীরণবাবু বলেন, ‘‘শিশুটির বিপদ সম্পূর্ণ কেটেছে। ওকে এখন ওয়ার্ডে অবজ়ারভেশনে রেখে দু’একদিনের মধ্যে ছুটি দেওয়া হবে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, ‘‘বিষের জেরে শিশুর হৃদস্পন্দন প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। শুধু অ্যান্টিভেনম সিরামে বাঁচানো যেত না। মেডিক্যাল কলেজে রেফারেরও সুযোগ ছিল না। ওই চিকিৎসকের সঠিক ও সাহসী পদক্ষেপেই শিশুটি নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।’’

কিছু দিন আগে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় যকৃৎ ফেটে মরণাপন্ন হয়ে পড়েন খিদিরপুর এলাকার যুবক অভিজিৎ হালদার। বালুরঘাট শল্য বিশেষজ্ঞ অভিজিৎ বক্সি এবং মহেন্দ্র কুমার হাসপাতালেই ল্যাপরোস্কোপি করে পেটে জমে থাকা এক লিটারের বেশি রক্ত বার করে যকৃতের মেরামত করে যুবকের প্রাণ বাঁচান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Alternative Treatment Snake bite Child
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE