Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
police

কুমারগঞ্জ ধর্ষণ-কাণ্ডের পুনর্নির্মাণে লাঠি দিয়ে মার অভিযুক্তকে! প্রশ্নের মুখে পুলিশ

ওই ঘটনা সংক্রান্ত তথ্য ও ইলেকট্রনিক্স নথি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বড় প্রমাণ। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র ও পেট্রলের বোতলও উদ্ধার করা হয়েছে।

মারমুখী: তরুণী খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণে অভিযুক্তকে লাঠি দিয়ে মার পুলিশের। ছবি: অমিত মোহান্ত

মারমুখী: তরুণী খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণে অভিযুক্তকে লাঠি দিয়ে মার পুলিশের। ছবি: অমিত মোহান্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:৪৩
Share: Save:

কুমারগঞ্জে তরুণী খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণে অন্যতম এক অভিযুক্তকে মারধরের অভিযোগ উঠল পুলিশকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। তবে জেলার পুলিশকর্তারা সেই অভিযোগ মানেননি। এ সংক্রান্ত ছবির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। তদন্তকারীদের দাবি, ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময়ে ধৃত তিন জন খুনের কথা স্বীকার করেছে। ওই স্বীকারোক্তি ভিডিও ক্যামেরায় রেকর্ডও করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ কুমারগঞ্জ থানা থেকে ধৃতদের নিয়ে সাফানগরের বোলতোর এলাকায় যান তদন্তকারীরা। সেখানে ছিলেন একাধিক পুলিশ আধিকারিক এবং বিএলএলআরও। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে দেখায় ধৃতেরা। কী ভাবে ওই তরুণীকে ধর্ষণের পরে ছুরি দিয়ে গলা কেটে দেয় তা-ও অভিনয় করে দেখায়। এর পরে মাঠ থেকে প্লাস্টিকের বোতল কুড়িয়ে নিয়ে মোটরবাইক থেকে তাতে পেট্রল ভরে তরুণীর দেহ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময় এক অভিযুক্তকে লাঠি দিয়ে মারধর করতে দেখা যায় কয়েক জন পুলিশকর্মীকে। তবে পুলিশ সে কথা মানেনি।

পুলিশ জানায়, গত রবিবার রাতে গঙ্গারামপুরের ওই তরুণীকে ফুঁসলে তুলে নিয়ে যায় প্রতিবেশি এক যুবক। সঙ্গে ছিল মূল অভিযুক্তের আরও দুই বন্ধু। বাড়ি থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে কুমারগঞ্জ থানার বোলতোর এলাকার ফাঁকা এলাকায় নিয়ে গিয়ে ওই তরুণীকে পরপর ধর্ষণ করা হয়। অভিযোগ, অত্যাচারে তরুণী জ্ঞান হারালে মূল অভিযুক্ত যুবক চাকু দিয়ে তাঁর গলা কেটে দেয়। তার দুই বন্ধু তরুণীর দেহে পেট্রল ঢেলে দেওয়ার পরে মূল অভিযুক্ত দেশলাই জ্বালিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।

এ দিন জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, ‘‘ঘটনার পুনর্নির্মাণে ধৃতেরা অভিনয় করে সব দেখিয়ে অপরাধ স্বীকার করেছে। তরুণীর দেহ ফরেন্সিক তদন্তে পাঠানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই মামলার চার্জশিট আদালতে পেশ করা হবে।’’

পুলিশ জানায়, ওই ঘটনা সংক্রান্ত তথ্য ও ইলেকট্রনিক্স নথি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বড় প্রমাণ। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র ও পেট্রলের বোতলও উদ্ধার করা হয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, তরুণীর রক্তের দাগ লেগে থাকা ধৃতদের জামাকাপড় বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বিএলএলআরওকে দিয়ে এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে প্রাথমিক ভাবে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। তবে দেহটি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ায় আরও নিশ্চিত হতে দেহের ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হচ্ছে।

এ দিকে, তরুণী খুনের মামলায় দ্রুত তদন্ত শেষ করে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বিভিন্ন ব্লকে প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ আন্দোলন করে বিজেপি। বুধবার বালুরঘাট, কুমারগঞ্জ ও গঙ্গারামপুর এলাকায় একই ইস্যুতে বিজেপি নেতাকর্মীরা মোমবাতি মিছিল করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE