ফের জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হল কোচবিহারে। সোমবার রাতে কোচবিহার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম আবির ভট্টাচার্য (৫৮), বাড়ি তুফানগঞ্জের দেওচড়াইয়ে।
২৫ অগস্ট জ্বরে কাবু ওই ব্যক্তিকে বাড়ির লোকেরা কোচবিহার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। সোমবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে চলতি অগস্ট মাসে তুফানগঞ্জে জেইতে আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হল। সম্প্রতি দেওচড়াই লাগোয়া নাককটিগছ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আখিমা বেওয়া (৬০) ও রবি দাসের (৬৩) মৃত্যু হয় জেই-তে। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের আরও একজনের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ বেড়ে গিয়েছে স্থানীয় মানুষজনের।
পরপর জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় বাসিন্দাদের অনেকেই স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর সার্টিফিকেটে অ্যাকুইট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রমে মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তবে মঙ্গলবার রাতে মৃতের সিএসএফ পরীক্ষার রিপোর্ট পৌঁছয় জেলা স্বাস্থ্য দফতরে। তাতেই ওই ব্যক্তির জেই পজিটিভ ছিল বলে রিপোর্ট মেলে।
কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ওই ব্যক্তির জেই পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। মৃতের জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের প্রতিষেধক টিকা নেওয়া ছিল না। তবে এলাকায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” জানা গিয়েছে, দেওচড়াই ও লাগোয়া এলাকায় মশা মারতে বিশেষ অভিযান হবে। স্প্রে করার কাজ শুরুও হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে প্রচারের পদক্ষেপও প্রশাসনের তরফ থেকে করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে এই নিয়ে কোচবিহারে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু হল। তাঁদের মধ্যে সাতজন জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। বাকি সাতজন অ্যাকুইট এনসেফ্যালাইটিসের লক্ষণ নিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তুফানগঞ্জের দেওচড়াই এলাকায় কিছুদিন আগে অ্যাকুইট এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে রমানাথ বর্মন (৬৮) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে অসমের ধুবুরির বাসিন্দা কিশোর ইসমাইল আলি (১২) জ্বর নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। ডেঙ্গিতে অসুস্থ হয়ে তুফানগঞ্জ পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দাও বর্তমানে বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালেও জ্বর নিয়ে বেশ কয়েকজন ভর্তি আছেন। সবমিলিয়ে জেলার মধ্যে তাই তুফানগঞ্জ নিয়ে বাড়তি উদ্বেগ রয়েছে প্রশাসনের।
সোমবার রাতে কোচবিহার হাসপাতালে জেইতে মৃত আবিরবাবুর বাড়ি, কিছুদিন আগে জ্বরে মৃত রমানাথ বর্মনের বাড়ির এক কিমি দূরে। মৃত আবির ভট্টাচার্যের মেয়ে পিঙ্কি বলেন, “স্বাভাবিক জ্বর বলে ভেবেছিলাম। পরে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে বাবা আক্রান্ত বলে জানি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy