সারা ও তাসিয়া। নিজস্ব চিত্র
অসহায় বৃদ্ধা আনে গুড়িয়া ও তাঁর মেয়ে রেণুকার মতো আরও এক হতদরিদ্র মা-মেয়ের খোঁজ মিলল বালুরঘাটের কাছে সেই দক্ষিণ কুয়ারন গ্রামেই!
আনে-রেণুকার মতোই দীর্ঘদিন ধরে অর্ধাহারে অপুষ্টির জেরে শীর্ণ শরীর নিয়ে ধুঁকছেন বছর পঁয়ষট্টির বৃদ্ধা সারা হেড়ে ও তাঁর ৩০ বছরের মেয়ে তাসিয়া। বৃদ্ধা আনের বাড়ি থেকে মাত্র দু’শো মিটার দূরে মা-কে নিয়ে থাকেন অবিবাহিত তাসিয়া। দেখার কেউ নেই। বৃদ্ধা সারার শরীরটা বেঁকে কুঁজো হয়ে গিয়েছে। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না। আর তাসিয়া সদ্য তিরিশেই বুড়িয়ে গিয়েছেন। কঙ্কালসার শরীর নিয়ে তাসিয়া দিনমজুরির খোঁজে বের হলেও কাজ মেলে না। এলাকায় ১০০ দিনের কাজও নেই। তাসিয়ার কথায়, তাঁদের দুই ভাই তাঁদের সঙ্গে থাকেন না। বিয়ে করে আলাদা থাকেন। সংসারে কোনও আয় নেই। তাই অন্ত্যোদয় কার্ড থাকা সত্ত্বেও কোনও কাজে আসে না। তাসিয়া বললেন, ‘‘খুব কষ্ট আমাদের। মজুরির কাজ না পেলে খুদকুঁড়ো খেয়েই দিন কাটে।’’ পঞ্চায়েতে বহু দরবার করেও তাঁর মায়ের বার্ধক্যভাতা মেলেনি বলে অভিযোগ।
টিনের ছাউনির ঘরের বাসিন্দা এই মা-মেয়ের দুর্দশার কথা জানেন স্থানীয় বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্য পিটার বারুর। এলাকার একাংশ বাসিন্দার অভিযোগ, আনে-রেণুকার দুর্দশার খবর সামনে আসার পর থেকে অস্বস্তিতে ওই বিদায়ী সদস্য কারও সামনে আসছেন না।
এদিকে, আনে-রেণুকার সহায়তায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে প্রশাসন থেকে বিভিন্ন সংস্থা ও ক্লাব। কয়েকদিনের ওই ভিড়েই আড়ালে ঢাকা পড়ে গিয়েছে গ্রামেরই বাসিন্দা সারা-তাসিয়ার শুকনো দৃষ্টি। স্থানীয় বাসিন্দা জুয়েল হোড় এবং টগর মণ্ডল বলেন, ‘‘তাসিয়ারাও ধুঁকছেন। সহায়তা দরকার।’’ বালুরঘাটের বিডিও সুস্মিতা সুব্বা বলেন, ‘‘ব্লক থেকে প্রতিনিধি দল কুয়ারনে পাঠিয়ে বৃদ্ধা সারাদেবীদের পরিস্থিতি খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্লক মেডিক্যাল অফিসারের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওই এলাকায় চিকিৎসক দলও পাঠানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy