দেবেন্দ্রনাথ রায়
গঙ্গা টপকে পালানোর ছক ছিল ঝাড়খণ্ডে। তার আগেই পুলিশ ও সিআইডির জালে ধরা পড়ল উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মাবুদ আলি। শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের মোথাবাড়ি থানার পঞ্চানন্দপুর এলাকায়। মাবুদ মালদহের চাঁচলের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা। সে আত্মীয়ের বাড়ি মোথাবাড়িতে লুকিয়ে ছিল বলে দাবি পুলিশ ও সিআইডির। এ দিনই তাকে সিআইডি রায়গঞ্জে নিয়ে যায়। এর মধ্যে বৃহস্পতিবারই দেবেনবাবুর মৃত্যু তদন্তে সিবিআই-কে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শুরু হয়েছে।
গত ১৩ জুলাই বাড়ির কাছেই ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের। তাঁর মৃতদেহের কাছ থেকে একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার হয়েছিল বলে দাবি পুলিশের। ঘটনায় হইচই পড়ে যায় রাজ্য-রাজনীতিতে। ঘটনার দিনই থানায় মালদহের দুই বাসিন্দা নিলয় সিংহ ও মাবুদ আলির নামে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বিধায়কের স্ত্রী চাঁদিমা রায়। কোটি টাকা আর্থিক তছরুপের অভিযোগ রয়েছে ওই দুই যুবকের বিরুদ্ধে। পরদিনই ইংরেজবাজার শহরের একটি আবাসন থেকে নিলয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরেই পুলিশ নিলয়কে তুলে দেয় সিআইডিকে। নিলয় এখন জেল হেফাজতে রয়েছে।
অন্য অভিযুক্ত মাবুদ আলি এত দিন ফেরার ছিল। পুলিশ সূত্রে দাবি, তাদের তাড়ায় গাড়ি ফেলে উধাও হয়ে যায় মাবুদ। শেষে ২৪ দিন পর জালে পড়ল মাবুদ। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিলয় উত্তর দিনাজপুরের সমবায় ব্যাঙ্কে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করত। সমব্যায় ব্যাঙ্ক সূত্রেই বিধায়কের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপরে তাঁর রায়গঞ্জের বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকত নিলয়। নিলয়ের মাধ্যমে মাবুদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল দেবেনের। তিন জনে একসঙ্গে ব্যবসা করার নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল বলে প্রাথমিক অনুমান সিআইডির। কে এই মাবুদ? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাবুদ কোন পেশার সঙ্গে যুক্ত, তা কেউ জানেন না। তবে এলাকায় কোনও জমি বিক্রি হলেই ক্রেতা হিসেবে সবার আগে এগিয়ে আসত মাবুদই। গ্রামে তার দোতলা দ্বিতল বাড়ি রয়েছে। সম্প্রতি সাদা রঙের একটি বিলাশবহুল গাড়ি কেনে সে। গাড়ির নম্বরপ্লেট এখনও হয়নি। সে অপহরণ এবং গোলমাল পাকানোর অভিযোগে দু’বার গ্রেফতার হয়েছিল আগে। জেলও খেটেছে।
পুলিশের নজর এড়াতে ঝাড়খণ্ড সংলগ্ন মোথাবাড়ির পঞ্চানন্দপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে ছিল মাবুদ। পুলিশ জানিয়েছে, গঙ্গা পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে পালানোর ছক ছিল। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সিআইডির এক কর্তা বলেন, “মাবুদকে আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy