Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মিশন গৌড়বঙ্গ, ভোট-দায়িত্ব অর্পিতাকেও

তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, কালিয়াগঞ্জে কোনও দিনই তৃণমূল খুব শক্তিশালী ছিল না। ২০১১ সালে জোটের স্বার্থে এই আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়েছিল তৃণমূল। সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী প্রমথনাথ রায় ৮৪ হাজার ৮৭৩টি ভোট পেয়ে জেতেন। তিন বছর পরে লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ আসনে চতুর্মুখী লড়াই হয়।

অর্পিতা এখন দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি। ফাইল চিত্র।

অর্পিতা এখন দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:৫৯
Share: Save:

কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে দলকে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হল অর্পিতা ঘোষ আর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বৃহস্পতিবার দলীয় বৈঠকে এই নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্পিতা এখন দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি। যদিও কালিয়াগঞ্জ কেন্দ্রটি উত্তর দিনাজপুর জেলায়, দল সূত্রে বলা হচ্ছে, সেখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলে ভোটে দলকে লড়াই করার মতো জায়গায় আনতে অর্পিতার উপরে ভরসা রাখলেন দলনেত্রী।

অর্পিতা এ দিন বলেন, ‘‘আমাকে আর রাজীবকে দায়িত্ব দিয়েছেন নেত্রী। অমলদা (ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য) আর অসীমের (রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ) সঙ্গে বসে আমরা পরিকল্পনা নেব, কী ভাবে আমাদের প্রার্থীকে জেতানো যায়।’’
তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, কালিয়াগঞ্জে কোনও দিনই তৃণমূল খুব শক্তিশালী ছিল না। ২০১১ সালে জোটের স্বার্থে এই আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়েছিল তৃণমূল। সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী প্রমথনাথ রায় ৮৪ হাজার ৮৭৩টি ভোট পেয়ে জেতেন। তিন বছর পরে লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ আসনে চতুর্মুখী লড়াই হয়। সেখানে রায়গঞ্জের অন্তর্গত কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসনে বামেরা সব থেকে বেশি ভোট পায়। দ্বিতীয় কংগ্রেস, তৃতীয় তৃণমূল। চতুর্থ হয় বিজেপি। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেস সমঝোতা হয়েছিল। সেখানে প্রমথবাবু ফের জেতেন। তিনি সে বারে পান ১,১২,৮৬৮টি ভোট। সম্প্রতি লোকসভা ভোটে এই ছবিটা পুরোপুরি উল্টে গিয়েছে। কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে ১,১৮,৮৯৫টি ভোট পেয়ে তৃণমূলের থেকে প্রায় ৫৭ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি।

তৃণমূলের একটি অংশই বলছে, লোকসভা ভোটের পরে এই ছ’মাসে এমন কিছু ঘটে যায়নি যে ভোটের সমীকরণ পুরো বদলে যাবে। একমাত্র অসমে এনআরসি তালিকা প্রকাশের পরে সেই নিয়ে তৃণমূল প্রচার শুরু করায় কিছুটা ব্যাকফুটে গিয়েছে বিজেপি। কিন্তু তাতেও ৫৭ হাজার ভোটের ব্যবধান মিটিয়ে জয় ছিনিয়ে নেওয়া কঠিন কাজ। দল অবশ্য রাজবংশী এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির তপন দেব সিংহকে প্রার্থী করেছে। তা-ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার দলকে কত দূর টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব এখানে, তা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেই সংশয় আছে।

তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, কঠিন পরীক্ষা বলেই অর্পিতার উপরে ভরসা রাখলেন নেত্রী। দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, অমল আচার্য যেমন জেলার এই অংশটি হাতের তালুর মতো চেনেন, তেমনই অর্পিতার রয়েছে লড়াকু মনোভাব। দলের ওই সূত্রের বক্তব্য, লোকসভা ভোটে দক্ষিণ দিনাজপুরের ভূমিপুত্র বিপ্লব মিত্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও শেষ অবধি মাটি কামড়ে পড়ে লড়াই চালান। যদিও শেষে হেরে যান বিজেপির সুকান্ত মজুমদারের কাছে। তৃণমূলের একটি অংশের দাবি, অর্পিতার ওই লড়াকু মনোভাবটাই কালিয়াগঞ্জে ব্যবহার করতে চাইছেন মমতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Arpita Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE