ভিড়: চিতাবাঘের হানায় মৃত শিশুর দেহ মেলার পর। নিজস্ব চিত্র
সন্ধে থেকে নিখোঁজ থাকার পরে বুধবার সকালে ডুয়ার্সের গ্যারগেন্দা চা বাগান থেকে উদ্ধার হল তিন বছরের শিশু কন্যার ছিন্নভিন্ন দেহ। শিশুর মায়ের দাবি, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চিতাবাঘ তিন বছরের মেয়েটিকে টেনে নিয়ে যায়। এ নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলায় গত দেড় মাসে চিতাবাঘের হামলায় তিন শিশুর মৃত্যু হল।
আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট ব্লকের গ্যারগেন্দা চা বাগানের দুখুয়া লাইনের বাসিন্দা পুজা ওরাওঁ জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি মেয়ে প্রণিতাকে নিয়ে উঠোনে ছিলেন। সেই সময়ই চিতাবাঘটি হানা দেয় বলে অভিযোগ। পূজার চিৎকার শুনে পড়শিরা বেরিয়ে আসেন। কোনও অসতর্ক মুহূর্তে পূজার মেয়েকে চিতাবাঘটি টেনে নিয়ে যায় বলে বাগানের অন্য বাসিন্দাদের দাবি। পড়শিদের অনুমান, উঠোনে যে চিতাবাঘ ঢুকেছে তা হয়ত পূজা খেয়াল করেননি। পূজার অবশ্য দাবি, তিনি চিতাবাঘটিকে দেখেছিলেন। তিনি বলেন, “একটা বড় চিতাবাঘ ছিল। আমার সামনেই মেয়েটাকে টেনে নিয়ে গেল। আমিও পিছনে দৌড়লাম। কিছুটা এগিয়ে আর চিতাবাঘটিকে দেখতে পাইনি।”
এ দিন বুধবার সকাল থেকে বনকর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা চা বাগানে তল্লাশি শুরু করেন। চা বাগানের বারো নম্বর সেকশন থেকে তিন বছরের মেয়েটির দেহ উদ্ধার হয়। বন দফতর জানিয়েছে, দেহটি চার টুকরো অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে।
ওই অঞ্চলের বাগানগুলিতে চিতাবাঘের আতঙ্ক নতুন কোনও ঘটনা নয়। বন দফতর জানিয়েছে, এর আগে ১২ ডিসেম্বর ধুমচিপাড়া চা বাগানে ইডেন নায়েক (৫) ও ২২ ডিসেম্বর রামঝোরা চা বাগানে অনিকেত ওরাওঁ নামে (১২) দু’টি শিশু চিতাবাঘের হামলায় মারা যায়। তার পরেই গ্যারগেন্দা বাগানে দু’টি চিতাবাঘের দেহ উদ্ধার হয়। বিষ-মাংস খাইয়েই তাদের খুন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “খুবই দুঃখজনক। তবে ওই চা বাগানগুলি একসময় বন্ধ থাকায় সেখানে চিতাবাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। চিতাবাঘ ধরার জন্য খাঁচা পাতা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই পরিবারকে দু’লক্ষ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। আরও দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হবে।’’
বন দফতর দাবি করেছে, গত দেড় মাসে এলাকার কয়েকটি চা বাগান থেকে পাঁচটি চিতাবাঘ ধরা হয়েছে। সেই চিতাবাঘগুলিকে ছাড়া হয়নি। গ্যারগেন্দা চা বাগানে চিতাবাঘ ধরতে ইতিমধ্যে দশটি খাঁচা পাতা ছিল, আরও চারটি খাঁচা পাতা হবে। ডিএফও কুমার বিমল বলেন, “সাধারণত দেখা গিয়েছে, চিতাবাঘ ছাগল মুরগি জাতীয় সহজ খাবারের শিকার করে। বারবার শিশুদের আক্রমণ করা খুবই উদ্বেগের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy