—ফাইল চিত্র।
দলে গুরুত্ব পাচ্ছেন না তপনের বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদাও। দক্ষিণ দিনাজপুর তৃণমূলের এসসি-এসটি সেলের জেলা সভাপতি সত্যেন রায় প্রকাশ্যে ওই একই অভিযোগ তুলে শুক্রবার দল ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন। প্রকাশ্যে না হলেও জেলার অন্যতম আদিবাসী মুখ তথা জেলার একমাত্র মন্ত্রী বাচ্চু দীর্ঘ দিন গুরুত্ব না পাওয়ার একরাশ হতাশা উগড়েছেন শনিবার।
শনিবার টেলিফোনে বাচ্চু বলেন, ‘‘সাংগঠনিক ভাবে দল আমাকে গুরুত্বই দিল না। আমি নিজের মতোই রয়েছি।’’ তবে ঘনিষ্ঠ মহলে বাচ্চু এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ফলে উত্তরবঙ্গে মিহির গোস্বামীর পর গঙ্গারামপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সত্যেন রায় এবং তপনের বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদার ক্ষোভ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে। বাচ্চুর বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেও বলছেন কেউ কেউ।
তবে সেই জল্পনা ভিত্তিহীন বলে দাবি করে এ দিন বাচ্চু বলেন, ‘‘যা হওয়ার হবে। দল আমাকে গুরুত্বই দিল না। এ সব নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। আমি আপাতত আমার বিধানসভা নিয়েই রয়েছি।’’
২০১১ সালে প্রথম তপন কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়ে বাচ্চু হাঁসদা বিধায়ক হন। এর পরে তাঁকে ডিপিএসসির চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়। পরের বারও বাচ্চু জিতলে তাঁকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী করা হয়। তার পর থেকে তৎকালীন তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। বিপ্লব-বিরুদ্ধ গোষ্ঠী বলে পরিচিত অর্পিতা ঘোষ, সত্যেন রায়দের দলে বাচ্চু ভিড়ে যান বলে দল সূত্রে খবর। কিন্তু অর্পিতা জেলা সভাপতি হতেই বাচ্চুর সঙ্গে অর্পিতারও দূরত্ব তৈরি হয় বলে অভিযোগ।
মাস পাঁচেক আগে অর্পিতাকে সরিয়ে গঙ্গারামপুরের বিধায়ক গৌতম দাসকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি করে চেয়ারম্যান করা হয় শঙ্কর চক্রবর্তীকে। যুগ্ম কোঅর্ডিনেটর হন সুভাষ চাকি ও ললিতা টিগ্গা। বাচ্চু ব্রাত্যই থেকে যান বলে অভিযোগ। তৃণমূলের নতুন জেলা নেতৃত্ব-পরিচালিত দলেও বাচ্চুর অবস্থান বদলায় না। বরং বর্তমান নেতৃ্ত্বের ডাকা দলের একাধিক কর্মসূচিতে লাগাতার বাচ্চু অনুপস্থিতি সেই অবহেলার কারণ বলেও দলের অন্দরে চর্চা হতে থাকে। প্রাক্তন জেলাপরিষদের সভাধিপতি ললিতা টিগ্গার জেলা কমিটিতে ঠাঁই হলেও, কেন তাঁকে বাইরে রাখা হল, তা নিয়েও মনের মধ্যে একরাশ ক্ষোভ ছিল বলে বাচ্চুর অনুগামীরা জানিয়েছেন।
দলীয় সূ্ত্রের খবর, তপনে প্রাসাদোপম বাড়ি নিয়ে পিকের বাঁকা নজরে পড়ে আসন্ন বিধানসভা ভোটে বাচ্চুর টিকিট পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত। ফলে মিহির তৃণমূল ছাড়তেই স্বাভাবিক ভাবে বাচ্চুকে নিয়েও দলে চাপ তৈরি হয়েছে বলে খবর।
তৃণমূল জেলা সভাপতি গৌতম দাস, কোঅর্ডিনেটর ললিতা টিগ্গা থেকে প্রাক্তন সভাপতি বিপ্লব মিত্রের মনতব্য জানতে একাধিক বার ফোন করা হলেও তাঁরা ধরেননি। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস অবশ্য বলেন, ‘‘দল গুরুত্ব দেয়নি এটা বাচ্চুর ব্যক্তিগত মতামত। বাচ্চু বা সত্যেন দল ছাড়ার মতো কাজ করবেন বলে আমাদের মনে হয় না। দলের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝির জন্য ওই কথা বলেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy