\বালুরঘাটের দূরদর্শন অফিসের ছবি। নিজস্ব চিত্র
টেবিলে বসানো রয়েছে মাইক্রোফোন। সঞ্চালকের জন্য পাতা রয়েছে চেয়ারও। তৈরি সম্পূর্ণ পরিকাঠামো। নেই কর্মীই। কর্মীর অভাবে ধুলো জমছে চেয়ার-টেবিলে। অব্যবহারে মরচে ধরে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। উদ্বোধনের দুই বছর পর আকাশবাণী বালুরঘাট কেন্দ্রের বর্তমান ছবিটা ঠিক এমনই। আর এ ভাবে তৈরি করা পরিকাঠামো নষ্ট হওয়ায়, এই স্টুডিও তৈরির উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ। যদিও অদূর ভবিষ্যতে এই স্টুডিও চালুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে দফতরের আধিকারিকদের সূত্রে খবর।
দূরদর্শনের বালুরঘাট রিলে সেন্টারের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র দিলীপকুমার দাস বলেন, ‘‘এখানে আকাশবাণীর স্টুডিয়ো চালুর উদ্দেশ্যেই এই পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। স্টুডিয়োয় কোনও কর্মী না থাকায় তা চালু হয়নি। ভবিষ্যতে নিশ্চয় স্টুডিয়োটি চালু হবে। আপাতত আমাদের কর্মীরাই দেখভাল করছে।’’
কিন্তু কবে এটি চালু হবে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারেন নি। কাজেই স্টুডিও চালুর সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।
সূত্রের খবর, আকাশবাণী কলকাতার মতো শিলিগুড়িতেও আকাশবাণী ভবন রয়েছে। শিলিগুড়ির মতোই আকাশবাণীর একটি বালুরঘাটেও স্টুডিয়ো তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। বালুরঘাটের আরণ্যকের পাশে দূরদর্শনের রিলে সেন্টারের মধ্যেই একপাশে এই স্টুডিও তৈরির কাজ শুরু হয়। প্রায় দু’বছর আগে স্টুডিয়ো তৈরি করে করা হয় উদ্বোধনও।
সূত্রের খবর, স্টুডিয়োর জন্য সাউন্ড প্রুফ ঘর, সঞ্চালকের বসার জন্য স্টুডিও, গল্প দাদুর আসর বা অনুরোধের আসর বসানোর জন্য আলাদা ব্যবস্থাও তৈরি করা রয়েছে এখানে। প্রশাসনের পরিকল্পনা ছিল, এই স্টুডিয়ো থেকে আঞ্চলিক চাষবাসের খবর, আবহাওয়ার খবর সম্প্রচার করা হবে। পাশাপাশি, সম্প্রচার করা হবে বিভিন্ন লাইভ ও রেকর্ডেড সংগীতানুষ্ঠানও। এই উদ্দেশ্যে লাইভ সম্প্রচারের জন্য কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে মেশিনপত্রও বসানো হয়েছে। রয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বেতার সিগনালিং ব্যবস্থাও।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই স্টুডিয়ো চালু করতে আকাশবাণী থেকে কোনও কর্মী নিয়োগ করা হয়নি। দুরদর্শনের কর্মীরা শুধু দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন। সূত্রের খবর, এই স্টুডিয়ো চালু করতে কমপক্ষে ২০ জন কর্মী প্রয়োজন। কর্মীর অভাবে উদ্বোধনের এত বছর পরেও স্টুডিয়ো চালু না হওয়ায় বেকারদের যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ নষ্ট হচ্ছে, তেমনি আবহাওয়ার খবর সম্প্রচারিত না হওয়ায় কৃষকরাও আগাম পূর্বাভাস পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
স্টুডিয়ো চালু না হওয়ায় গল্প, গানের বিভিন্ন লাইভ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগও হারাচ্ছেন জেলার শিল্পীরা। এ অবস্থায় দ্রুত কর্মী নিয়োগ করে এই স্টুডিয়ো চালুর দাবি উঠেছে। বালুরঘাটের সাংসদ অর্পিতা ঘোষ অবশ্য এই স্টুডিয়ো চালুর বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অর্পিতা বলেন, ‘‘আমি খুব শীঘ্রই কেন্দ্রের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে এই স্টুডিয়ো চালু করতে আবেদন করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy