Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পৌষের পূর্ণিমায় বর্ষবরণেই অরণ্যে বরণ দেবীও

উদ্যোক্তারা জানান, অতীত বৈকুণ্ঠপুরের রাজ-আমলেও বনে দুর্গা পুজো হতো বলে তাঁরা শুনেছেন। ৩৭ বছর আগে নতুন করে বনদুর্গার পুজোর আয়োজন করেন কয়েকজন অত্যুৎসাহী।

থান: এখানেই বনদুর্গার পুজো আজ। ছবি স্বরূপ সরকার

থান: এখানেই বনদুর্গার পুজো আজ। ছবি স্বরূপ সরকার

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৯
Share: Save:

পৌষের হিমেল পূর্ণিমায় ‘বর্ষবরণ’ ও ‘দেবীবরণ’ একাকার হতে চলেছে বৈকুণ্ঠপুরের ঘন জঙ্গলে। আজ, সোমবার নিশুতি রাতে হাতি-চিতাবাঘের বিচরণ ক্ষেত্রে হবে ‘বনদুর্গা’র পুজো। এক রাতের সেই পুজোয় সামিল হতে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, বালুরঘাটের অনেকেই। সংরক্ষিত বনাঞ্চলের অন্দরে সেই পুজো নিয়ে পরিবেশপ্রেমীরা নানা প্রশ্ন তোলেন। তবুও সাড়ে তিন দশকের বেশি সময় ধরে চলে আসা বনদুর্গা পুজো ঘিরে উদ্দীপনা কম নেই।

তাই পুজোর সময়ে বন্যপ্রাণ-মানুষ সংঘাত এড়াতে পুলিশ-প্রশাসন ও বন দফতরও অতি মাত্রায় সতর্ক। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, ওই এলাকায় বাড়তি নজরদারি রাখা হয়েছে। বন দফতরের কয়েকজন অফিসার জানান, বনাঞ্চলের মধ্যে পুজোর সময়ে যাতে কোনও নেশার আসর না বসে সে দিকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, রাতে সেখানে ঢালাও খিচুড়ি প্রসাদের ব্যবস্থাও হয়।

উদ্যোক্তারা জানান, অতীত বৈকুণ্ঠপুরের রাজ-আমলেও বনে দুর্গা পুজো হতো বলে তাঁরা শুনেছেন। ৩৭ বছর আগে নতুন করে বনদুর্গার পুজোর আয়োজন করেন কয়েকজন অত্যুৎসাহী। বাসিন্দাদের অনেকে জানান, মূলত কয়েকজন ব্যবসায়ী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পৌষ-পূর্ণিমায় পুজোর আয়োজনে মেতে ওঠেন। প্রতিমা গড়া হয় শিলিগুড়িতেই। এ বার প্রতিমা তৈরি করেছেন সংহতি মোড়ের নিউ পালপাড়ার বাদল পাল। আজ, দুপুরের মধ্যে বনপথে সেই দেবী প্রতিমা রওনা হবে মণ্ডপের উদ্দেশে। সাফসুতরো করে মণ্ডপ সাজা হয়েছে।

পুজো কমিটির আয়োজকদের পক্ষে নিত্য মজুমদার বলেন, ‘‘গভীর বনাঞ্চলে মাঝরাতে পুজো শুরু হয়। ভোরের মধ্যেই তা শেষ হয়ে য়ায়। খিচুড়ি প্রসাদ বিলির পরে দুপুরের মধ্যেই সকলকেই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হয়। বনের কিংবা বন্যপ্রাণকে কেউ যাতে বিরক্ত না করেন, সে জন্য লাগাতার প্রচার চালানো হয়।’’

ঘটনা হল, নজরদারি বাড়ালেও সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পুজো ঘিরে উদ্বেগ কিন্তু কম নেই পুলিশ ও বন দফতরে। কারণ, ওই এলাকায় হাতির করিডর রয়েছে। মাঝেমধ্যে হাতির হানায় জখম হওয়ার ঘটনাও কম নেই। দু বছর আগে পুজোর আয়োজনস্থল থেকে ফেরার সময়ে হাতির হানায় এক জনের মৃত্যু হয়েছিল। উপরন্তু, বন দফতর ও পুলিশ চার দিকে পাহারায় থাকলেও তাদের নজর এড়িয়ে আসর বসানোর চেষ্টাও চলে। পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানান, সুস্থভাবে পুজোয় অংশগ্রহণ নিয়ে কারও আপত্তি নেই। কিন্তু, পুজোর ছলে যদি আগুন জ্বালিয়ে পানভোজনের আসর বসানো হয় তা হলে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে। উদ্যোক্তারা জানান, তাঁরাও সতর্ক থাকবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Baikhantupur forest Siliguri Bana Durga Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE