নায়ক: জয়ের পরে অঙ্কিতকে কোলে নিয়ে উচ্ছ্বাস দলের। —নিজস্ব চিত্র।
তৃতীয় দিনের শেষে হতাশ হয়েই মাঠ ছেড়েছিলেন হাতে গোনা দর্শকেরা। আফশোস করছিলেন, প্রয়াস রায়বর্মণের এত ভাল বোলিং কাজে লাগাতে পারছে না বাংলার ব্যাটসম্যানেরা। তা হলে কি হেরে যাবে দল? এই সংশয় উড়িয়ে দিয়ে বৃহস্পতিবার শেষ দিনে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে নাটকীয় জয় পেল বাংলা অনূর্ধ্ব ১৯ দল। এবং এই জয় এল অঙ্কিত চট্টোপাধ্যায়ের দুরন্ত শতরানে ভর করে।
এ দিন মাটি কামড়ে পড়ে থাকেন ১৭ বছরের অঙ্কিত। ২৩৪ বলে ৩টি ওভারবাউন্ডারি ও ৯টি বাউন্ডারি সমেত অঙ্কিতের সংগ্রহ ১১১ রান। অঙ্কিতের সঙ্গে বাংলার করণ লালও ৭৪ বলে ৪৯ রান করে অপরাজিত থেকে খেলা ধরে রেখে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন। ৩টি বাউন্ডারি এবং ৩টি ওভারবাউন্ডারি মেরেছেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলার স্পিনার প্রয়াসের ঘূর্ণিতে মধ্যপ্রদেশ মাত্র ১৯৫ রানে থমকে যায়। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলার জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল।
কিন্তু বুধবার পড়ন্ত বেলায় টুর্নামেন্টের শেষ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে মাত্র ৯৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যায়। বহরমপুরের বাসিন্দা অঙ্কিতের কথায়, ‘‘প্রথম ইংনিসে রান পাইনি বলে মোটেই হতাশ হইনি। এ দিন উইকেট আঁকড়ে থাকতে হবে ধরে নিয়ে মাঠে নেমে পড়ি।’’ কলকাতার একটি স্কুলের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া তারপর দিনভর ক্রিজ আঁকড়ে থেকে চার-ছক্কা মেরে দলের স্কোরবোর্ডকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। এ দিন বাংলার এই দুই তরুণ ব্যাটসম্যানের খেলার উত্তেজনার আঁচ ছড়িয়ে পড়ে দর্শকদের মধ্যেও। এ দিন সকাল থেকে সময় যত এগিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের ভরসা তিন বোলার ইশান আফ্রিদি, অধীরপ্রতাপ সিংহ ও প্রাণকেশ রাইয়ের আপ্রাণ চেষ্টার বিরুদ্ধে বাইশ গজে অটল থেকে লক্ষ্যের দিকে এগোতে থাকেন অঙ্কিতেরা। মধ্যপ্রদেশের সব কৌশল ব্যর্থ করে পরপর মাঠের বাইরে বল পাঠিয়ে দিয়ে জয়ের আশা ক্রমশ জাগিয়ে তোলেন অঙ্কিত ও করণ।
মধ্যপ্রদেশের ইশান ৪৯ রান দিয়ে ২ উইকেট, অধীরপ্রতাপ ৬৫ রান দিয়ে ২ উইকেট এবং প্রাণকেশ ৬৩ রান দিয়ে মাত্র ১ উইকেট তুলতে সক্ষম হন। অথচ প্রথম ইনিংসে এই প্রাণকেশই পরপর ৪ উইকেট নিয়ে বাংলার ব্যাটিং লাইন ধসিয়ে দিয়েছিলেন।
কৌশিক মিত্রের ৬১ বলে ৩৮ রান ছাড়া বাংলার বাকি ৫ জন ব্যাটসম্যান দাঁড়াতে পারেননি। তবে লাঞ্চের পরেই অঙ্কিত-করণের দাপট বাড়তে থাকে। ২৭২ রানের পর করণের বাউন্ডারিতে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা টপকে বাংলা ৬ উইকেটে রান সংখ্যা ২৭৬ রানে পৌঁছতেই খেলা শেষ হয়ে যায়। দিনের শেষে মধ্যপ্রদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়ে জয়ী হয় বাংলা।
স্কোরকার্ড
মধ্যপ্রদেশ ২২৫ ও ১৯৫ রান। বাংলা ১৪৮ ও ২৭৬ রান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy