নিহত: আবু মিয়াঁ। নিজস্ব চিত্র
ভোটের ভেরি বাজার পর থেকেই কোচবিহারের দিনহাটায় যুব তৃণমূলের সঙ্গে বারবার তৃণমূলের সংঘর্ষ হয়েছে। এক কর্মী গুলিবিদ্ধও হন। তার মধ্যেই বুধবার রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে আবু মিয়াঁ (৫২) নামে এক তৃণমূলকর্মীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল যুবর কর্মীদের বিরুদ্ধে। ওই তৃণমূলকর্মীর স্ত্রী জরিনাবিবি এ বার ভোটে দাঁড়িয়েছেন।
ওই দিন রাত থেকেই উত্তেজনা ছড়ায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিনহাটা থানার সামনে অবরোধে বসেন তৃণমূলকর্মীরা। তাঁদের দাবি, পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে। তাঁরা দিনহাটা থানার আইসি জহরজ্যোতি রায়ের বদলির দাবিও তুলেছেন। আবুর দেহও তাঁরা নিয়ে যেতে দিচ্ছিলেন না। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ ও সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়াও। ৭ এপ্রিল তৃণমূলকর্মী মাফিজার রহমানকে গুলি করা হয়। সেই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। উদয়নবাবুর দাবি, পুলিশের ভূমিকায় দুষ্কৃতীদের সাহস বাড়ছে। তাই আইসি-র বদলি চান তাঁরা। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, “রাতেই পুলিশ এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে।”
তার পরেও অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে কোচবিহার থেকে প্রচুর পুলিশ নিয়ে যাওয়া হয় দিনহাটায়। ওই ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বিকাল ৩ টার পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
দলীয় সূত্রের খবর, গ্রাম পঞ্চায়েতের টিকিটের দাবি নিয়ে দিনহাটায় দলের যুব সংগঠনের কর্মীদের সঙ্গে তৃণমূলের বিরোধ চরমে উঠেছে। দিনহাটা ১ ব্লকে প্রায় সব আসনেই প্রার্থী দেয় তৃণমূল ও যুব সংগঠনের সদস্যরা। এর পরেই এক পক্ষ অন্য পক্ষকে প্রার্থী প্রত্যাহার করতে চাপ দিতে থাকে বলে অভিযোগ। কয়েক দিন ধরে দু’পক্ষই রাতে সশস্ত্র অবস্থায় এলাকায় ঘুরছে বলে অভিযোগ। বুধবার ছিল স্ক্রুটিনি। ওই দিন দুই দলেরই জমায়েত হয় দিনহাটা ১ ব্লক অফিসে। সেখানে আবুও তাঁর স্ত্রী জরিনাবিবিকে নিয়ে হাজির ছিলেন। স্ক্রুটিনি সেরে বাড়ি ফেরার ৩ ঘণ্টার মধ্যেই আবুর বাড়িতে হামলা হয়। তাঁর ভাইপো কায়েদুলের অভিযোগ, ‘‘দুষ্কৃতীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাকাকে কোপায়। তাঁর স্ত্রী, ছেলেরা বাধা দিলে তাঁদেরও মারধর করা হয়।’’ বাড়িও ভাঙচুর করা হয়। রক্তাক্ত আবুকে দিনহাটা হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ঘটনায় নাম জড়িয়েছে সংগঠনের কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক নিশীথ চক্রবর্তীরও। তিনি বলেন, “আমি কলকাতায়। মিথ্যে মামলা করা হয়েছে।” বিধায়ক জগদীশের দাবি, “যুব সংগঠনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে অপরাধমূলক কাজ হচ্ছে।” যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ও জানান, দুষ্কর্মের সঙ্গে যুক্তরা দলের কেউ নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy