Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মালদহে তৃণমূলের চ্যালেঞ্জ এখন তৃণমূলই

একেই মালদহে কংগ্রেস শক্তিশালী, তার ওপর এই অতিরিক্ত প্রার্থীদের যদি মনোনয়ন প্রত্যাহার না করানো যায়, তবে গোঁজে জেরবার হয়ে নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়িতেই দল হারবে বলে আশঙ্কা নেতৃত্বের অনেকেরই। এ নিয়ে দলে জোর আলোচনাও শুরু হয়েছে।

জয়ন্ত সেন
মালদহ শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৪৯
Share: Save:

মালদহে মনোনয়নের স্ত্রূটিনির পর পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরে, আসনের চেয়ে অতিরিক্ত প্রার্থী রয়ে গেলেন ১২২০ জন। এই অতিরিক্ত প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোই এখন দলের নেতৃত্বের কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শুধু তাই নয়, একেই মালদহে কংগ্রেস শক্তিশালী, তার ওপর এই অতিরিক্ত প্রার্থীদের যদি মনোনয়ন প্রত্যাহার না করানো যায়, তবে গোঁজে জেরবার হয়ে নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়িতেই দল হারবে বলে আশঙ্কা নেতৃত্বের অনেকেরই। এ নিয়ে দলে জোর আলোচনাও শুরু হয়েছে।

দলীয় সূত্রেই খবর, ত্রিস্তরেই এই অতিরিক্ত প্রার্থী নিয়ে সমস্যা ঘোরালো হওয়ায় আজ শুক্রবার জেলাস্তরের পঞ্চায়েত স্ক্রিনিং কমিটির পাঁচ সদস্যকে কলাকাতায় তলব করেছেন তৃণমূলের মালদহ জেলা পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি আদালতের নির্দেশে ১৬ তারিখ পর্যন্ত নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত থাকায় মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য হাতে সময় বেশি মিলছে বলে সমস্যা মেটানো নিয়ে আশাবাদী জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব।

বিক্ষোভ: দিনহাটা থানার সামনে তৃণমূলের আন্দোলন। নিজস্ব চিত্র

একেই দ্বন্দ্বে জেরবার মালদহের তৃণমূল। এই দ্বন্দ্ব মেটাতে দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে সুব্রত বক্সি বা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী নানা দাওয়াই দিলেও বাস্তবে দ্বন্দ্ব মেটেনি। এই দ্বন্দ্বের মাঝে এ বার পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী দাঁড় করানো নিয়ে দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেয়েছে।

দ্বন্দ্বের জেরেই জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত-এই তিন স্তরেই আসনের চেয়ে দলীয় প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে পড়েছে। প্রশাসনিক সুত্রই জানাচ্ছে, স্ত্রূটিনির পর জেলা পরিষদের ৩৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের রয়েছেন ৪৯ জন। পরিষদের ৪, ১২, ১৪, ১৫, ১৬, ১৮, ৩০, ৩২, ৩৫ নম্বর আসনগুলিতে দু’জন করে দলেরই প্রার্থী এবং ৩১ নম্বর আসনে তো তিন জন। ফলে বাড়তি রয়েছেন মোট ১১ জন।

পঞ্চায়েত সমিতির ৪২৩টি আসনে তাঁদের প্রার্থী ৭০৮ জন। অর্থাৎ বেশি ২৮৫ জন। এর মধ্যে কালিয়াচক ৩ ব্লক সমিতিতে ৪২টি আসনে ৮৮ জন, ইংরেজবাজারে ৩২টি আসনে ৪২ জন, রতুয়া ২ ব্লকে ২৪টি আসনে ৪২ জন, মানিকচকে ৩১টি আসনে ৬৭ জন করে দলীয় প্রার্থী রয়েছেন। এ দিকে গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২৮১টি আসনে তৃণমূলের প্রার্থী ৩১০৫ জন। বেশি রয়েছে ৯২৪ জন। সব গ্রাম পঞ্চায়েতেই আসনের চেয়ে প্রার্থী অনেকটাই বেশি। আর এই সংখ্যার সমস্যা মেটানোই এখন দলীয় নেতৃত্বের কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের হয়ে পড়েছে।

দলের এক জেলা নেতা বলছেন, দলে দ্বন্দ্ব এমন পর্যায়েই রয়েছে যে বিবদমান গোষ্ঠীর লোকজন একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। প্রতীক যারা পাবে না তারা গোঁজ হয়েই লড়বেন। আর এতে নিজেরা খেয়োখেয়ি করে বিরোধীদের জেতার রাস্তা সুবিধা করে দেবে।

দলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘ব্লকে ব্লকে, প্রয়োজনে পঞ্চায়েত স্তরে বসে অতিরিক্ত প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের বিশয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। আশাকরছি সময়ে তা হয়েও যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Elections 2018 TMC Candidate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE