Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

সেরা এমজেএন হাসপাতাল

বর্হিবিভাগের টিকিট কাউন্টার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। রোগীদের আত্মীয়দের অপেক্ষার জন্য  বসার ঘর ঝাঁ-চকচকে। রাত-বিরেতেও আশঙ্কাজনক রোগীর জন্য খোলা থাকে ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক। মেলে এক্সরে, ইসিজি বা সিটি স্ক্যানের সুবিধেও। মহারাজার আমলে তৈরি সেই কোচবিহার এমজেএন হাসপাতাল এ বার নিয়ে নিয়ে এল কেন্দ্রীয় সরকারের পুরস্কার।

স্বীকৃতি: হাসপাতালে এসেছে পুরস্কার। নিজস্ব চিত্র

স্বীকৃতি: হাসপাতালে এসেছে পুরস্কার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৮ ০২:০৮
Share: Save:

বর্হিবিভাগের টিকিট কাউন্টার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। রোগীদের আত্মীয়দের অপেক্ষার জন্য বসার ঘর ঝাঁ-চকচকে। রাত-বিরেতেও আশঙ্কাজনক রোগীর জন্য খোলা থাকে ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক। মেলে এক্সরে, ইসিজি বা সিটি স্ক্যানের সুবিধেও। মহারাজার আমলে তৈরি সেই কোচবিহার এমজেএন হাসপাতাল এ বার নিয়ে নিয়ে এল কেন্দ্রীয় সরকারের পুরস্কার।

মানের দিক থেকে বিচার করে রাজ্যে সেরার ওই শিরোপা কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালকে দেওয়া হয়। ওই তালিকায় নাম রয়েছে শিলিগুড়ি হাসপাতালেরও। তবে হাসপাতাল নিয়ে অভিযোগ যে নেই তা নয়। কখনও রক্তের সঙ্কট। কখনও রেফার। কখনও আবার ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগও ওঠে হাসপাতালের বিরুদ্ধে। আবার টেকনিসিয়ান না থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে থ্যালাসেমিয়া বিভাগও।

ভাল-মন্দ মিলিয়ে চলা ওই হাসপাতালের এমন পুরস্কারে অবশ্য খুশি সবাই। ওই হাসতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান মিহির গোস্বামী বলেন, “হাসপাতালের পরিষেবা উন্নয়নে আমরা চেষ্টার কোনও খামতি রাখছি। রাজ্য সরকার সবরকম সাহায্য করছে। তার পরেও হয়তো কিছু খামতি থেকে যায়। আশা করছি আগামীতে আরও এগিয়ে যাবে এই হাসপাতাল। এই পুরস্কারে আমরা খুশি।” কোচবিহার জেলা হাসপাতালের সুপার জয়দেব বর্মন বলেন, “পরিষেবা থেকে চিকিৎসার খুঁটিনাটি সবদিক থেকে খতিয়ে দেখে ভারত ওই সরকার ওই পুরস্কার দেয়। ইতিমধ্যেই আমরা দিল্লিতে গিয়ে দেই পুরস্কার গ্রহণ করেছি। মান বজায় রাখতে কখনও খামতি রাখা হবে না।”

মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণের নামে থাকা ওই হাসপাতাল কোচবিহার জেলা হাসপাতালের মর্যাদাপ্রাপ্ত। শহরের প্রাণকেন্দ্রে সুনীতি রোড লাগোয়া ওই হাসপাতাল জেলার মানুষের কাছে বড় ভরসা। নিম্ন অসম, আলিপুরদুয়ার ও ফালাকাটা থেকেও বহু রোগী ওই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। চিকিৎসকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কিছুটা কম থাকলেও পরিকাঠামোর দিক থেকে হাসপাতাল অনেকটাই উন্নত।

বর্হিবিভাগে প্রত্যেকদিক কয়েক হাজার রোগী ভিড় করেন। অন্তর্বিভাগে ৫৭০টি শয্যা রয়েছে। বেশিরভাগ সময়ে ওই রোগীদের ভিড় লেগে থাকে সেখানেও। হাসপাতালে শিশুদের জন্য এসএনসিইউ তৈরি হয়েছে। মুমূর্ষ রোগীদের জন্য ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটও গড়ে তোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে রক্তের প্লেটলেট গোনা ও দেওয়ার ব্যবস্থাও তৈরি করা হয়েছে। রয়েছে ডায়ালিসিসের ব্যবস্থাও। ডিজিটাল এক্সরে, সিটি স্ক্যান, ইসিজি, আলট্রাসোনোগ্রাফির ব্যবস্থা রয়েছে। এমআরআই সেন্টার উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।

পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার দিক থেকেও হাসপাতাল অনেকটাই এগিয়েছে। যদিও দুই-এক জায়গায় এখনও পানের পিক পড়ে থাকতে দেখা যায়। ওই ব্যাপারে রোগীদের আত্মীয়ের কাছে দীর্ঘদিন ধরে আর্জি জানিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ভারত সরকার ওই পুরস্কার চিকিৎসা খুঁটিনাটি, পরিষেবা, পরিচ্ছন্নতা সব বিষয় পরিমাপ করে তবেই দেন।

গত বছর ফের ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের তিন সদস্যের দল তিন দিন ধরে হাসপাতালের সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখেন। পরে তাঁরাই রিপোর্ট জমা দেন। তার উপর ভিত্তি করেই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, “এই পুরস্কার আমাদের উৎসাহিত করেছে। আমরা চেষ্টা করব বাকি খামতিগুলো পুরণ করতে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE