বিনয় তামাং। —ফাইল চিত্র।
এর আগে নতুন দার্জিলিং তৈরির ডাক দেওয়া হয়েছিল। এ বার পাহাড়ের প্রত্যেক মহকুমায় ‘ভিশন কমিটি’ গড়া শুরু করল অনীত থাপা, বিনয় তামাংদের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। দলীয় সূত্রের খবর, দলের পুরনো নিয়মে এই কমিটিতে শুধু দলীয় নেতানেত্রী, কর্মীদের রাখা আর হচ্ছে না। বদলে সেখানে প্রাধান্য দিতে বলা হয়েছে এলাকার শিক্ষক, চিকিৎসক, সমাজসেবী, খেলোয়াড়, ব্যবসায়ীর মতো সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট লোকজনকে। প্রত্যেক মহকুমায় এমন কমিটি গড়ে সেটির মাধ্যমে আগামী দিনের কাজকর্ম, উন্নয়নের রূপরেখা তৈরির পরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে কার্শিয়াঙে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠক হয়। বিধানসভার কথা মাথায় রেখে ভিশন কমিটি ছাড়াও আলাদা করে নেতানেত্রীদের দ্রুত বুথ কমিটি তৈরি করে সংগঠনকে মজবুত করতে বলা হয়েছে। অনীত থাপা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। একই ভাবে মিরিকে দলীয় বৈঠক করেন বিনয় তামাং। করোনা মোকাবিলার সঙ্গে সঙ্গে আগামী বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে মোর্চা ঘর গোছানো শুরু করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। মোর্চার চেয়ারম্যান অনীত শুধু বলেছেন, ‘‘সবাইকে নিয়ে একজোট হয়ে চলাটাই আমাদের লক্ষ্য। কারণ, আমি একা কিছু করতে পারব না।’’
মোর্চা সূত্রের খবর, গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে লড়ে অমর সিংহ রাই ২৬.৫৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। সেখানে বিজেপি, বিমল গুরুংয়ের মোর্চা, জিএনএলএফের জোটবদ্ধ প্রার্থী রাজু বিস্তা প্রায় ৫৯ শতাংশ ভোট পান। দার্জিলিং বিধানসভার উপ-নির্বাচনে বিনয় তামাং ২৯ শতাংশ মতো আর বিজেপি প্রার্থী নীরজ জিম্বা ৬১ শতাংশ ভোট পান। দলের বৈঠকে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গত বছর ৩০ শতাংশ ভোটও পাননি দলীয় প্রার্থী।
সেখান থেকে ২০২০ সালে পরিস্থিতি কিছুটা বদল হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই বিভিন্ন উন্নয়নের পরিকল্পনা এবং কাজ নিয়ে অনীত, বিনয়ের উপর মানুষের আস্থা বেড়েছে। এর সঙ্গে প্রয়োজন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে বেশি করে সব সময় পাশে রাখা। সে জন্যই ‘ভিশন কমিটি’ গঠনের ভাবনা শুরু।
মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েক জন নেতা জানান, আগামী ভোটে পাহাড়ের তিনটি বিধানসভা থেকেই মোর্চার প্রার্থী থাকবে, তা ধরে নেওয়াই হচ্ছে। তৃণমূলের সামান্য পরিমাণ ভোট ছাড়া বাকি একাই লড়তে হবে দলকে। সেই জায়গায় বিজেপি চেষ্টা করবে জিএনএলএফ, গোর্খা লিগ ও বিমলপন্থীদের একজোট করে রেখে ভোটে লড়তে। এর বিরুদ্ধে আবার লড়তে গেলে বুথস্তর অবধি জনসমর্থনটা জরুরি।
দলের আর এক জন নেতা জানান, পাহাড়ে সুবাস ঘিসিং বা বিমল গুরুং বরবার দলের নেতানেত্রীদের বাইরে একটা বৃত্ত তৈরি করতেন। কোনও সময় পরামর্শদাতা কমিটি, কখনও স্টাডি ফোরাম নাম দেওয়া হত সেই কমিটিকে। তাতে শিক্ষিত, বুদ্ধিজীবী, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির মানুষরা থাকতেন। সেই পুরনা পথে হেঁটেই ‘ভিশন কমিটি’ নাম দিয়ে দলকে বিধানসভার আগে চাঙ্গা করতে চাইছেন অনীত, বিনয়রা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy