প্রতীকী ছবি।
দাড়িভিট এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এর মধ্যে বিষয়টিকে নিয়ে রাজ্যে তো বটেই, কেন্দ্রীয় স্তরেও আন্দোলনের কথা ভাবনাচিন্তা করছে বিজেপি। উল্টো দিকে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলে কী ভাবে পরিস্থিতির রাশ নিজেদের হাতে রাখবে, সেটাই এখন তৃণমূলের সামনে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দাড়িভিট নিয়ে লাগাতার আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে ফেলেছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। রবিবার নিহতদের বাড়িতে যাওয়ার কথা বিজেপির তফসিলি সেলের কেন্দ্রীয় কমিটির একটি প্রতিনিধি দলের। ৬ অক্টোবর ইসলামপুর শহরে জনসভা করবে বিজেপি। সেখানে দলের রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত থাকতে পারেন বলেই রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন।
অন্য দিকে, দাড়িভিট কাণ্ডের পরে নিজের খাসতালুকে পরপর বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবাল। মন্ত্রী গোলাম রব্বানিকে নিয়ে দাড়িভিটে গিয়ে সেখানকার মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। বুধবার বন্ধের দিন শহরের জীবনমোড়েও স্থানীয়রা তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায়। ঘনিষ্ঠ মহলে কানাইয়া জানিয়েছেন, শহরে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হবে, সেটা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি।
বিতর্ক ও জল্পনা উস্কে দিয়ে কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘‘ইসলামপুরে রাশ আলগা হচ্ছে তৃণমূলের।’’
এই জল্পনা আরও বাড়িয়েছে তৃণমূল সূত্রের একটি খবর। দলেরই একাংশের দাবি, বৃহস্পতিবার ব্যবসা বন্ধ আটকাতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বোঝাতে মাঠে নেমেছিলেন কানাইয়া ঘনিষ্ঠ কয়েক জন নেতা। কিন্তু তাতে তো চিঁড়ে ভেজেইনি, উল্টে সংবাদমাধ্যমের সামনে বিবৃতি দিয়ে দোকান ভাঙচুরের জন্য সরাসরি তৃণমূলকে দায়ী করেছেন ব্যবসায়ীরা।
বামফ্রন্ট নেতা ও গোয়ালপোখরের বিধায়ক আলি ইমরান রমজের (ভিক্টর) দাবি, ‘‘গোলাম রব্বানি ও কানাইয়ালালের গোষ্ঠী কোন্দলের জন্যই ইসলামপুরে অশান্তি বাড়ছে। আর তার সুযোগে বিজেপি সংগঠন বাড়াচ্ছে।’’ যদিও গোষ্ঠী কোন্দলকে বিরোধীদের অপপ্রচার বলেই উল্লেখ করেছেন রব্বানি। তিনি জানান, কয়েক দিন পরে দলীয় পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী আবার ইসলামপুরে আসবেন। তখন আলোচনা করে বিজেপিকে মোকাবিলায় দলীয় অবস্থান ঠিক করা হবে। কানাইয়ালালেরও দাবি, ইসলামপুরের সাধারণ মানুষ তাদের সঙ্গেই আছেন।
নিচু তলার তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, সাবিত্রী-কৃষ্ণেন্দুর কোন্দলে যেমন মালদহে পিছিয়ে পড়েছিল দল, যেমন ভাবে বালুরঘাটে শঙ্কর চক্রবর্তী ও বিপ্লব মিত্রের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খেসারত দিতে হয়েছে দলকে, এখানেও না তেমনই হয়! তৃণমূল সূত্রে খবর, স্থানীয় কয়েক জন নেতা ইতিমধ্যেই এই কোন্দলের কথা জানিয়েছেন রাজ্য নেতাদের। তাঁদের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে এ বার আরও গোলমাল পাকাতে পারে বিজেপি।
বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেনও বলেন, ‘‘তৃণমূল এমনিতেই বেকায়দায় পড়েছে। আমরা ইসলামপুরের পাশাপাশি গোটা রাজ্যে দাড়িভিটকে সামনে রেখে আন্দোলন চালাব।’’ তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন, ‘‘বিজেপি বাইরে থেকে কয়েক জন লোক এনে গন্ডগোল পাকাতে চাইছে। আমরা শান্তি চাই। তাই কোন প্ররোচনায় পা দেব না। মানুষ আমাদের সঙ্গেই আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy