ফাইল চিত্র
ল্যাপটপ এবং ডেস্কটপ মিলিয়ে জলপাইগুড়িতে শ’খানেক কম্পিউটার কিনতে চলেছে বিজেপি। নিয়োগ করা হচ্ছে ১৪০ জন তরুণ পেশাদারকে। বিজেপির দাবি, নয়া আইনে দ্রুত নাগরিকত্ব তথ্য যাচাইয়ের কাজ শুরু হবে। তখন সেই তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে সাধারণ বাসিন্দাদের সহযোগিতা করবেন এই পেশাদারেরা।
যদিও এর পিছনে গেরুয়া শিবিরের অন্য উদ্দেশ্য দেখছে তৃণমূল-সহ জেলার রাজনৈতিক মহল। গত মাসেই উত্তরবঙ্গের নেতাদের নিয়ে কর্মিসভায় বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দলের সব বুথের নেতাদের নিজের নিজের এলাকায় ‘অনুপ্রবেশকারী’ খুঁজতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পেশাদার লোকজন নিয়োগ করে জলপাইগুড়ি জেলায় বিজেপি নেতারা সেই প্রক্রিয়াই শুরু করছে বলে আশঙ্কা বিরোধী রাজনীতিকদের।
বিজেপির অবশ্য দাবি, নাগরিকত্ব যাচাইয়ের ক্ষেত্রে যাতে ফের নোটবন্দি বা আধার কার্ড নিয়ে দুর্ভোগের স্মৃতি ফিরে না আসে, তা নিশ্চিত করতেই দলের কর্মীরা সহযোগিতা করবেন। এতে বাসিন্দাদের সহানুভূতি এবং ভোট দুই-ই মিলবে বলে বিজেপি নেতাদের দাবি। বিরোধীদের আশঙ্কা, পেশাদারদের মাধ্যমে বিজেপি দলগত ভাবে এ ভাবেই সমস্ত নাগরিকের তথ্য জোগাড় করার কৌশল নিয়েছে।
নয়া নাগরিক আইনে তথ্য যাচাই রাজ্যে সরকারি ভাবে কতটা হবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। সব মাথায় রেখেই নয়া আইন নিয়ে সমান্তরাল ‘প্রশাসন’ কায়েম করতে চাইছে বিজেপি, অভিযোগ তৃণমূলের। কোন পরিবার কবে বাংলাদেশ থেকে এসেছে, কার কাছে নাগরিকত্ব প্রমাণের কী নথি রযেছে, কার জমির নথি নেই— এইসব তথ্য জোগাড় করে জেলা বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাবে বলে দাবি তৃণমূলের। সেই পরিবারগুলির নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে আশঙ্কা তৃণমূলের। বেছে বেছে তৃণমূল সমর্থক পরিবারগুলিরই নাম
কাটার চেষ্টা বিজেপি করবে বলে অভিযোগ, রাজ্যের শাসকদলের জেলা নেতাদের।
জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর অভিযোগ, “বিজেপি পেশাদার নিয়োগ করে সমান্তরাল ব্যবস্থা গড়তে চাইছে। কোনও পরিবার বাংলাদেশ থেকে এসেছে শুনলেই সেইসব নাম তালিকা থেকে কেটে দেবে। আমরাও বাসিন্দাদের বিজেপিকে কাগজ দেখাতে বারণ করব।”
জেলা বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামীর পাল্টা মন্তব্য, “তৃণমূল কী বলছে, তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সাধারণ মানুষের ভয় পাওয়ার কোনও কারণই নেই। নাগরিকত্ব যাচাই করার কাজেও বাসিন্দাদের কোথাও লাইন দিতে হবে না। আমরা সহায়তা শিবির করব।”
বিজেপির তরফেই বলা হচ্ছে,
প্রতি এলাকায় ‘সহায়তা শিবির’ হবে। সেখানে থাকবে দলের নিয়োগ করা পেশাদারেরা। কম্পিউটারের মাধ্যমে তাঁরাই বাসিন্দাদের হয়ে অনলাইনে ফর্ম পূরণ করে দেবেন। কম্পিউটার কেনা বা পেশাদার নিয়োগের বিপুল খরচ দিচ্ছেন দলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিজেপির এক জেলা নেতার কথায়, “বিপুল খরচ মনে হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তা নয়। কাজ শেষ হলে কম্পিউটারগুলি ফেরত দেওয়া হবে, তাতে দামের কিছুটা ঘরেই ফেরত চলে আসবে।”
জলপাইগুড়ির এক একটি বিধানসভা পিছু ২০ জন করে পেশাদার নিয়োগ করবে বিজেপি। তাঁদের কমপক্ষে দশটি দলে ভাগ করা হবে। এক একটি বিধানসভার ১০ থেকে ২০টি এলাকায় সহায়তা শিবির হবে। তিন মাসের চুক্তিতে পেশাদার নিয়োগ করছে গেরুয়া শিবির।
যাঁদের যোগ্যতা ন্যূনতম স্নাতক হতে হবে, ইংরেজি গড়গড় করে পড়তে পারবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy