পাহাড় চুড়ায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার থাকার প্রমাণ মিলেছিল আগেই, এ বার অনেকে মনে করছেন, ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ও রয়েছে। দার্জিলিং সদর ব্লকে লেবংয়ের কাছে পানডাম চা বাগানে সেই ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ বা কালো চিতা দেখা গিয়েছে বলে দাবি। পাহাড়ের ওই এলাকার বাসিন্দাদের কয়েক জন জানান, গত দেড় মাসে একাধিকবার কালো চিতাকে চাক্ষুষ করেছেন বাগানের শ্রমিক এবং কর্মীরা। তেমন একটি প্রাণীকে দেখা যাচ্ছে এমন একটি ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছে। তবে সেই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করেনি।
সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন ছড়িয়েছে রাজ্য বন দফতর ও পরিবেশপ্রেমী মহলে। পানডাম বাগানের ম্যানেজার শুভেন্দু সেনগুপ্ত নিজেই দু’বার বাগানের বিভিন্ন স্থানে ‘কালো চিতা’ দেখেছেন বলে দাবি করেন। তিনি নিজে বাঘের ছবি এবং ভিডিয়ো তোলেন বলেও দাবি করেছেন। সঙ্গে আরও একটি ডোরাকাটা সাধারণ চিতাবাঘ ও একটি শাবক চিতাবাঘও ছিল বলে শুভেন্দুবাবু জানান। এরপরই শ্রমিকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পরে। পানডাম রেঞ্জ বন দফতরকে জানিয়ে সেখান থেকে খাঁচাও পাতা হয় বাগানে। কিন্তু সেই ফাঁদে ধরা দেয়নি কালো চিতা। বন দফতরের স্থানীয় আধিকারিকরা অবশ্য জানিয়েছেন, বর্ষা নামলে পানডাম বাগানের উপরে থাকা হরসিংহাঁটা জঙ্গলের দিকে কালো চিতা চলে যেতেও পারে। শুভেন্দুবাবু বলেন, “কোনওদিন স্বপ্নেও ভাবিনি কালো চিতাবাঘ দেখব। গত দু’সপ্তাহ ধরে অবশ্য বাগানে সেটিকে আর দেখা যাচ্ছে না, হয়তো আরও উঁচু জঙ্গলে ঢুকে গিয়েছে।”
বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নিরক্ষারেখা সংলগ্ন অঞ্চলের যেখানে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয়, সে সব জায়গার বনভূমিতে এদের দেখা যায়। পাশাপাশি পাহাড়ি অঞ্চলেও দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মেলানিনের আধিক্যে এদের গায়ের রং কালো হয়। শুধু চিতাবাঘ নয় জাগুয়ারের মধ্যেও এই কালো রং মাঝে মধ্যে দেখা যায়। এরা সকলেই প্যান্থারা প্রজাতির বলে ব্ল্যাক প্যান্থার বলা হয়ে থাকে। বন্যপ্রাণ গবেষক অরিত্র ক্ষেত্রী এবং পরিবেশপ্রেমী শ্যামাপ্রসাদ পাণ্ডে দাবি করেন, এই প্রাণীর পরবর্তী প্রজন্ম মেলানিস্টিক না হয়ে স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ডুয়ার্সের বক্সাতে এই ধরনের কালো চিতাবাঘের দেখা কিছু বছর আগে মিলেছিল। চলতি মাসে মহানন্দা অভয়ারণ্যেও কালো চিতাবাঘ বনকর্মীরা দেখেছেন বলেও বনদফতরের অন্দরের খবর। অসমেও দেখা গিয়েছে বলে দাবি উঠেছে।
কিন্তু যে প্রাণীটির ছবি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, সেটি ঠিক কী তা নিয়ে বন দফতর এখনই মুখ খুলতে চাইছে না। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিংহ এ দিন বলেন, “ব্ল্যাক প্যান্থারের ছবি ভাইরাল হওয়ার বিষয়টি জানি, এখন আমরা সেই ছবি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy