কান্নায় ভেঙে পড়েছেন কাজলবাবুর পরিজন। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।
রাজ্য সড়কের ধারে এক সব্জি ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। মৃতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, ওই ব্যবসায়ীকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যবসায়ীর মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
পুরাতন মালদহের সাহাপুরের ডিস্কো মোড় এলাকার ওই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই। প্রতিবাদে দেহ ফেলে রেখে মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত কাজল সাহা (৩৮) পুরাতন মালদহের সাহাপুর পঞ্চায়েতের চরকাদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ইংরেজবাজারের মকদমপুর এবং গৌড় রোডে সবজি বিক্রি করতেন। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওই এলাকায় প্রায়ই চুরি ছিনতাই এবং হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনও কাজ হচ্ছে না। নিয়মিত পুলিশি টহলদারির অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুনের কারণ এখনও জানা যায়নি। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজলবাবুরা সাত ভাই। সব থেকে ছোট তিনিই। দীর্ঘ দিন ধরে সকালে তিনি ওই এলাকায় সব্জি বিক্রি করতে যান। তাঁর এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে রাজু এবং মেয়ে গোপা সাহাপুর হাই স্কুলে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। সম্প্রতি কাজলবাবু ভাল বাড়ি তৈরি করেছেন। তাঁর শিবানীদেবী বলেন, ‘‘আমার স্বামী দু’বেলা দোকান করতেন। রোজ রাত ১২টা নাগাদ বাড়ি ফিরতেন। এ দিন ফিরছেন না দেখে আমরা ফোন করলে যোগাযোগ করতে পারিনি। পরে জানতে পারি তাঁকে খুন করা হয়েছে। কী কারণে তাঁকে খুন করা হল, আমরা বুঝতে পারছি না। কারও সঙ্গে কোনও গোলমাল ছিল না। যাঁরা আমার সঙ্গে এমন করল, পুলিশ তাদের শাস্তি দিক।’’
এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দারা মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কের ধারে ওই ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁর মোটর বাইকটি ভাঙাচোরা অবস্থায় বাগানের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখা ছিল। ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে দেহ আটকে রেখে ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দারা প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। জেলার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু, সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা-সহ নেতারাও ছিলেন।
দেহ উদ্ধারে গেলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে বাধা দেন। পরে ডিএসপি উত্তম ঘোষ ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষোভকারীরা তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ শুরু করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বিক্ষোভকারীদের আশ্বাস দিয়ে অবরোধ তুলে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy