Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Death

সাত ঘণ্টা হাসপাতালে দেহ

বুধবার রাতে রাজগঞ্জের বাসিন্দা পঁচাত্তর বছরের ওই বৃদ্ধকে জলপাইগুডির সারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিবারের দাবি, রোগীর জ্বর, শ্বাসকষ্ট ছিল। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা নাগাদ হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০৬:১২
Share: Save:

মৃত্যুর পরে প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে দেহ পড়ে রইল সারি হাসপাতালের বিছানায়, অভিযোগ হাসপাতালের অন্য রোগীদের। বৃহস্পতিবার সকাল ছ’টার কিছু পরে জলপাইগুড়ির বিশ্ববঙ্গ ক্রীড়াঙ্গনের সারি হাসপাতালে ৭৫ বছরের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। অন্য রোগীদের অভিযোগ, দুপুর দেড়টা পর্যন্ত দেহ বিছানাতেই রেখে দেওয়া হয়। সাধারণ হাসপাতালের মতো নয় সারি হাসপাতাল। একটি বড় হলঘরে সব রোগীর পাশাপাশি বিছানা। করোনা হতে পারে, এমন সন্দেহভাজন রোগীদের সারি হাসপাতালে রেখে পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সংক্রমণ না মিললে সরাসরি বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয়। এই হাসপাতালের বিছানায় প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে দেহ রেখে দেওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে অন্য রোগীরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দুপুর একটা নাগাদ বিক্ষোভ শুরু করে করেন তাঁরা। দেহ না সরালে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ারও হুমকি দিতে থাকেন, অন্য রোগীরা। রোগীরা ফোন করে পরিজনেদের জানাতে থাকেন। স্বাস্থ্য কর্তা সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে খবর যায়। রোগীদের দাবি, বেলা দেড়টা নাগাদ দেহ সরানো হয়।

বুধবার রাতে রাজগঞ্জের বাসিন্দা পঁচাত্তর বছরের ওই বৃদ্ধকে জলপাইগুডির সারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিবারের দাবি, রোগীর জ্বর, শ্বাসকষ্ট ছিল। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা নাগাদ হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। অন্য রোগীরা দাবি করতে থাকেন, দ্রুত দেহ সরাতে হবে। রোগীদের অভিযোগ, দেহটি ঢেকেও দেওয়া হয়নি। এক রোগী বলেন, “তার মধ্যেই আমাদের সকালের খাবার, দুপুরের খাবার দেওয়া হল।” জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, “জ্বর, সর্দিকাশি নিয়ে এক রোগী ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে তাঁর শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েনি।” হাসপাতাল সূত্রের খবর, বুধবার রাতে ওই রোগী হাসপাতালে ভর্তির পরে তাঁর লালারসের নুমনা সংগ্রহ করা হয়নি। এ দিন মৃত্যুর পরে দুপুর বারোটা নাগাদ লালরসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। মৃতের শীরে কোনও সংক্রমণ মেলেনি। পরিবারের লোকেরা পরে হাসপাতালে পৌঁছতে দেরি করে বলে দাবি। সব মিলিয়ে দেহ বের করতে সময় লেগেছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি।

রোগীদের দাবি, লালরসের নুমনা নিতে বা মৃতের পরিবারের সদস্যরা আসতে দেরি হতেই পারে, ততক্ষণ দেহ অন্যত্র সরিয়ে রাখার ব্যবস্থা করা যেত। সারি হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর কথায়, “করোনা শুনলেই তো মনে ভয় ঢুকে যাচ্ছে। করোনা হয়েছে সন্দেহে সারি হাসপাতালে আনার পর থেকে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছি। তার ওপরে পাশের বিছানায় মৃতদেহ রাখা। এই অবস্থায় হাসপাতালে কাটাতে হল। মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE