Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষকের দেহ, পাশে পিস্তল

সেতুর নীচে পড়ে যুবকের গুলিবিদ্ধ দেহ। হাতের পাশেই একটি নাইন এমএম পিস্তল। শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ কালিয়াগঞ্জ থানার ধনকল পঞ্চায়েতে পেশায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

দেহের পাশেই পড়ে আছে পিস্তলটি। নিজস্ব চিত্র

দেহের পাশেই পড়ে আছে পিস্তলটি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৯ ০৪:১৯
Share: Save:

সেতুর নীচে পড়ে যুবকের গুলিবিদ্ধ দেহ। হাতের পাশেই একটি নাইন এমএম পিস্তল। শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ কালিয়াগঞ্জ থানার ধনকল পঞ্চায়েতে পেশায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল ডালিমগাঁও সংলগ্ন চাঁদপুকুর সেতু থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে কালিয়াগঞ্জ শহরের মাড়োয়ারিপট্টির নেতাজিমিলে বাড়ি নিহত মণীশ কেডিয়া আগরওয়ালের (৩৫)। দেহ পড়ে থাকতে দেখে বাসিন্দারাই পুলিশে খবর দেন।

পুলিশ জানিয়েছে, হেমতাবাদের মাটিয়াডোপ প্রাথমিক স্কুলের ওই শিক্ষকের মাথার ডান দিকে গুলি লেগেছে। তাঁর দেহের কাছ থেকে একটি খালি ব্যাগও উদ্ধার হয়েছে। প্যান্টের পকেট থেকে উদ্ধার হয়েছে তাঁর মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ। এ দিন দুপুরে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে দেহটি ময়নাতদন্ত করিয়েছে পুলিশ। খুন না আত্মহত্যা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দেহের পাশে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার ধরন দেখে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, যুবক আত্মহত্যা করেছেন।

উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘নিহতের পরিবারের তরফে এখনও খুনের অভিযোগ করা হয়নি। তদন্ত হচ্ছে।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, মণীশের বাবা পবন বছর দশেক আগে মারা গিয়েছেন। মা সুলোচনা গৃহবধূ। দুই ছেলের মধ্যে মণীশ ছোট। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি কালিয়াগঞ্জের একটি সাংস্কৃতিক সংস্থায় ছেলেমেয়েদের নাচও শেখাতেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান মণীশ। রাতে বাড়ি ফেরেননি। এ দিন পরিবারের লোকেরা বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি বলে খবর। এর পরে খোজাখুঁজি শুরু হলে তখনই বাসিন্দাদের কাছ থেকে তাঁরা মণীশের দেহ উদ্ধারের খবর পান।

তদন্তকারী পুলিশ কর্তাদের দাবি, মণীশের দেহের ডান হাতের উপর থেকে যে আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার হয়েছে, সেটির ভিতরে একটি কার্তুজের খোলও পাওয়া গিয়েছে। ওই যুবকের মাথার ডান দিকের অংশ ফুটো হয়ে একটি কার্তুজ ঢুকে গিয়েছে। যে এলাকায় যুবকের দেহটি উদ্ধার হয়েছে, সেখানে অন্য কারও পায়ের ছাপ উদ্ধার হয়নি বলেও জানান তাঁরা। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘গত কয়েক বছরে কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন মণীশ। বাজারে তাঁর ধারদেনাও বাড়ছিল। মানসিক অবসাদের জেরে তিন বছর আগে তিনি বাঁ হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিলেন।’’ ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে ওই যুবক আত্মহত্যা করেছেন, নাকি পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা প্রমাণ করতে আগ্নেয়াস্ত্রটি মণীশের ডান হাতের উপরে ফেলে গিয়েছে, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আত্মহত্যা করে থাকলে, তিনি আগ্নেয়াস্ত্রটি কোথায় পেলেন, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নিহতের দাদা পেশায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক অমিতের বক্তব্য, ‘‘পরিবারের তরফে পুলিশকে উপযুক্ত তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Unnatural Death Death Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE