Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলে পরীক্ষার মধ্যেই বিকট শব্দ

সবার চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ। স্কুলের সামনে জড়ো হয়েছেন অভিভাবকেরা। বারে বারে খোঁজ নিচ্ছেন, বাচ্চারা সব ঠিক আছে তো! প্রশ্ন করছেন, কী হয়েছিল এখানে? সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক কিছুই বলতে চাইছেন না।

উদ্বিগ্ন: স্কুলের সামনে অভিভাবকেরা। কোচবিহারে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

উদ্বিগ্ন: স্কুলের সামনে অভিভাবকেরা। কোচবিহারে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৩
Share: Save:

সবার চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ। স্কুলের সামনে জড়ো হয়েছেন অভিভাবকেরা। বারে বারে খোঁজ নিচ্ছেন, বাচ্চারা সব ঠিক আছে তো! প্রশ্ন করছেন, কী হয়েছিল এখানে? সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক কিছুই বলতে চাইছেন না। মনে হয়, কিছুক্ষণ আগেই হয়তো তাঁকে কেউ বলে গিয়েছেন, “মাস্টারমশাই, আপনি কিন্তু কিছু দেখেননি।” কিছু অভিভাবক অবশ্য খোলাখুলি বলছেন, “গুলি-বোমা নিয়ে স্কুলের সামনে ছুটছিল দুষ্কৃতীরা।” বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়ি থানার নিউ কোচবিহার স্টেশনের রাস্তায় তৃণমূল-বিজেপির লড়াইয়ে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য দেখে হাড় হিম হয়ে গিয়েছে বাসিন্দাদের। আশেপাশের বাড়িগুলি থেকে সবাই উঁকি দিলেও সরাসরি কেউই কিছু বলতে রাজি নন। পুলিশ অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে, দুষ্কৃতীরা পার পাবে না। স্থানীয়দের ভয় না পেয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করার আবেদনও জানিয়েছে তারা।

বাইশগুড়ি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অপূর্বকুমার বীর জানান, এ দিন স্কুলে পরীক্ষা চলছিল। সেই সময় বাইরে কিছু চিৎকার শুনতে পান তাঁরা। বিকট শব্দ হয়। তার পরেই আতঙ্কিত অভিভাবকেরা স্কুলে আসতে শুরু করেন। তিনি বলেন, “আমি বাইরে যাইনি। ঠিক কী হয়েছে, জানি না।” দুপুর আড়াইটা’র মধ্যে স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্র জানায়, বাইরে যখন চিৎকার হচ্ছিল, শিক্ষকেরা সবাইকে ক্লাসের বাইরে যেতে বারণ করেন। তার কথায়, “আমরা পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। তখন শব্দ শুনেছি। আমরা কেউ বেরোইনি।”

স্থানীয় বাসিন্দা রাধা দেব জানান, তাঁর বাবা-মায়ের বাড়ি বাইশগুড়িতে। বিবাহসূত্রে তিনি এখন বাইরে থাকেন। দিন কয়েক হল বাইশগুড়ি এসেছেন। এ দিন টোটোয় চেপে কোচবিহার শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, “টোটো একটু এগোতেই দেখি কয়েক জনের হাতে অস্ত্র। দুমদাম আওয়াজ পাই। সবাই বলছিল, গুলি-বোমা চলছে। আমরা টোটো থেকে নেমে পালাতে শুরু করি।” রাধার দাদার ছেলে বাইশগুড়ির ওই প্রাথমিক স্কুলে পড়াশোনা করে। দাদা বলেন, “স্কুলের সামনে এমন ঘটনায় সবাই হতবাক হয়ে যায়। এমন হলে কী করে শিশুদের স্কুলে পাঠানোর ভরসা পাবেন অভিভাবকেরা।”

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নিউ কোচবিহার ও সংলগ্ন এলাকায় আগেও রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়েছে। কিন্তু স্কুলের সামনে স্টেশন যাওয়ার প্রধান রাস্তার উপরে এ ভাবে গুলি-বোমা নিয়ে লড়াই হয়নি। ওই এলাকাতেই ছোট্ট খাবারের দোকান রয়েছে দীপ্তেশ সেনের। তিনি সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। গরিবদের জন্য দশ টাকায় খাবারের ব্যবস্থা করেন। তিনি বলেন, “দোকান খুলে বসেছি। এমন সময় দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে যায়। তড়িঘড়ি করে দোকান বন্ধ করে বাড়ির ভিতরে চলে যাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bomb Blast School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE