প্রতীকী ছবি।
সময় তখন সকাল ৮টা। কারও মুখ কাপড়ে বাঁধা, কারও মুখ হেলমেট দিয়ে ঢাকা। তেমন ভাবেই একদল যুবক ঢুকে পড়ে চান্দামারি বাজারে। রিভলভার উঁচিয়ে এগিয়ে চলে তারা। কয়েক জনের হাতে থাকা বাজারের থলের ভিতর থেকে বোমা বের করেও ছুড়তে শুরু করে। মুহূর্তেই দোকানপাট বন্ধ করে পালাতে শুরু করেন মানুষ। বোমাবাজির সময় সাগর রায় নামে এক শিশু জখম হয়েছে। সে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। তাঁকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
দিন কয়েক ধরেই ওই এলাকায় তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। অভিযোগ, এ দিনের ওই ঘটনার পিছনে রয়েছে তৃণমূল। বিজপির একটি পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বলকর বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, গত চার দিন ধরে ওই এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। দিনে ও রাতে সমানতালে এলাকায় বোমাবাজি চলে। ফলে ওই এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
এ দিন সকালেও তখন সবে বাজার খুলতে শুরু করেছে। সেই সময়ই বোমা পড়ার আওয়াজ শুরু হয়। আতঙ্কে সবাই ছুটোছূটি শুরু করে দেন। দলীয় সূত্রের খবর, চান্দামারি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে ছিল। লোকসভা ভোটের পরে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রাম পঞ্চায়েতকে দলে টেনে নেয় বিজেপি। এ দিন সেই পঞ্চায়েতদের একটি অংশকে আবার দল টেনে নেয় তৃণমূল। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূলের একদল দুষ্কৃতী চক্রান্ত করে চান্দামারিতে হামলা করে। এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানো এবং বিজেপি কর্মীদের হামলার উদ্দেশেই তারা এমনটা করেছে।’’ তিনি বলেন, “পুলিশের সামনেই বোমাবাজি হচ্ছে। রিভলবার নিয়ে ঘুরছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ কিছু করছে না। এটা মেনে নেওয়া হবে না। জেলা জুড়ে সন্ত্রাসের প্রতিবাদে শুক্রবার জেলাশাসকের দফতর ঘেরাও করা হবে।”
তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, এ দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলার প্রাক্তন সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বাড়িতে চান্দামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের আট জন সদস্য ফের দলে ফেরার কথা জানান। রবীন্দ্রনাথ বলেন, “আমাদের দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে বিজেপির পতাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই আতঙ্ক এখন কাটতে শুরু করেছে। সে জন্য বিজেপি আবার বিভিন্ন জায়গায় বোমাবাজি শুরু করেছে।”
সেখানে উপস্থিত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ভুবনেশ্বর রায় বলেন, “আমাকে জোর করে ভয় দেখিয়ে পার্টি অফিসে নিয়ে যায় বিজেপি।” বিজেপি ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এই অবস্থায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। ওই ছাত্র সাগর রায় বলে, “আমি টিউশন পরে বাড়ি ফিরছিলাম। সেই সময় আমার সামনে একটি বোমা পরে। আমি ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যাই।” পরে গিয়ে সাগরের একাধিক জায়গায় চোট লেগেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy