Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Gour Banga

বিধি ভাঙাই ‘বিধি’ গৌড়বঙ্গে

শনিবার বালুরঘাট আদালতের গেটের সামনে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মীকে মাস্ক ছাড়া দাঁড়িয়ে কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।

বিধিভঙ্গ: হাতের নাগাল থেকে পালানোর চেষ্টা, দৌড়ে গিয়ে টোটো পাকড়াও এক সিভিক কর্মীর। বালুরঘাটে। (মাঝে) মাস্ক নেই, আঁচল দিয়ে কোনও রকমে সন্তানের মুখ ঢাকছেন মা। রায়গঞ্জে। (ডান দিকে) বালুরঘাটেও হাত দিয়েই মুখ ঢাকছে খুদে। ছবি: অমিত মোহান্ত ও চিরঞ্জীব দাস

বিধিভঙ্গ: হাতের নাগাল থেকে পালানোর চেষ্টা, দৌড়ে গিয়ে টোটো পাকড়াও এক সিভিক কর্মীর। বালুরঘাটে। (মাঝে) মাস্ক নেই, আঁচল দিয়ে কোনও রকমে সন্তানের মুখ ঢাকছেন মা। রায়গঞ্জে। (ডান দিকে) বালুরঘাটেও হাত দিয়েই মুখ ঢাকছে খুদে। ছবি: অমিত মোহান্ত ও চিরঞ্জীব দাস

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২০ ০৫:০২
Share: Save:

করোনা-রুখতে কন্টেনমেন্ট জ়োনে পূর্ণ লকডাউনের ঘোষণা করেছে প্রশাসন। গৌড়বঙ্গ জুড়ে সে সব এলাকায় বিধি নেমে চলা হচ্ছে কি, কী বলছেন সেখানকার বাসিন্দারা। খোঁজ নিল আনন্দবাজার।

মালদহ

কন্টেনমেন্ট জ়োনে চাই ড্রপগেট:

লকডাউনে ইংরেজবাজার শহরের রবীন্দ্র অ্যাভিনিউ এলাকায় গার্ডরেল দিয়ে রাস্তা আটকেছে পুলিশ। তা ছাড়া শহরের কোথাও গার্ডরেল নেই। স্টেশন রোড থেকে শুরু করে বিএস রোড— ‘অবাধে’ চলছে টোটো, ই-রিকশা, মোটরবাইক, সাইকেল, রিকশ। লকডাউন সফল করতে দুর্গাপুজোর মতো শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ড্রপগেট চাইছেন অনেকেই।

বৃষ্টিতে ধুয়েছে গোল্লাছুট:

লকডাউনে ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়ি আনাজ বাজারে গোল্লাছুট এঁকেছিল পুলিশ। কিন্তু বৃষ্টিতে ধুয়েছে গোল্লাছুট। উধাও সামাজিক দূরত্ব পালন। গা ঘেঁষাঘেষি করে বাজারে কেনাবেচা চলেছে। এই দৃশ্য শুধু রথবাড়ি বাজারেই নয়, পুরো শহর জুড়েই।

অলিগলি ভরসা:

রবীন্দ্র অ্যাভিনিউ, ফোয়ারা মোড়ে তৎপর পুলিশ। গার্ডরেল টপকে যেতে হলে কারণ জানাতে হবে পুলিশকে। সন্তুষ্ট হলে তবেই মিলবে গার্ডরেল টপকানোর ছাড়পত্র। তাই শহরের অলিগলি দিয়েই চলছে অবাধ যাতায়াত। শহরের বাসিন্দাদের দাবি, গলির শহর হিসেবে পরিচিত ইংরেজবাজার। পুলিশের নজর এড়াতে অলিগলিতেই টোটো, ই-রিকশা, মোটর সাইকেলের আনাগোনা বেড়েছে। তাতে করোনা নিয়ে ভয় বাড়ছে অলিগলির বাসিন্দাদের।

দক্ষিণ দিনাজপুর

আপত্তি পুলিশকর্মীর:

শনিবার বালুরঘাট আদালতের গেটের সামনে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মীকে মাস্ক ছাড়া দাঁড়িয়ে কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। কেন মাস্ক নেই? তাঁর উত্তর, ‘‘মাস্ক পড়লে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।’’ অথচ শনিবারই ওই আদালতের এক আইনজীবী করোনায় আক্রান্ত হন। এর আগে করোনা সংক্রমিত এক পুলিশকর্মী আদালতে কাজে আসায় একটি এজলাস বন্ধ করে তার কাজকর্ম অন্য কোর্টে স্থানান্তরিত করতে হয়েছে।

পুলিশ দেখেই মাস্ক:

শনিবার বেলা ১১টা। শহরের সাধনামোড়ের কন্টেনমেন্ট জ়োন এলাকায় মাস্ক-হীন এক রিকশাচালক যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে। গাড়ি থেকে পুলিশ নেমে তাঁর দিকে তাকাতেই পকেট থেকে মাস্ক বের পরে ফেলেন ওই রিকশা চালক। পুলিশ যেতেই মাস্ক নামিয়ে ফোকলা হেসে বিড়ি ধরালেন তিনি।

ব্যাগে ধোঁকা:

দুপুর সাড়ে ১২টা। আধঘন্টা আগেই লকডাউন শুরু হয়েছে। পলিথিনে চাল ও কিছু আলু বাইক ঝুলিয়ে বের হওয়া এক যুবককে শহরের খাদিমপুর এলাকার রাস্তায় পুলিশ আটকায়। ব্যাগ দেখিয়ে ছাড়া পান যুবক। কিছুক্ষণ পরে ওই মোটরবাইক চালককেই ফের চকভবানি থানা মোড়ে পুলিশ আটকায়। ফের বাজারের ব্যাগ দেখিয়ে ছাড়া পেয়েই কলেজ মোড়ে বন্ধুদের আড্ডায় হেসে ওই যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘‘চাল ও আলুর ব্যাগ সব সময় বাইকে ঝোলানো থাকে। আগের লকডাউনেও পুলিশকে ধোঁকা দিয়ে এ ভাবেই ঘুরেছি।’’

উত্তর দিনাজপুর

বাঁশ টপকে:

কন্টেনমেন্ট জ়োনের মুখে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে পুলিশ বা প্রশাসনের কোনও কর্মীর নজরদারি নেই। বাঁশ টপকে অবাধে যাতায়াত চলছে। তা দেখা গেল রায়গঞ্জ শহরের কাঞ্চনপল্লিতে।

কন্টেনমেন্টে প্রশ্ন:

শনিবারও নেতাজিপল্লির বাসিন্দাদের ওই এলাকা থেকে অবাধে যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনের নজরদারি চোখে পড়েনি। এ দিন দুপুরে তিন যুবককে ওই এলাকার রাস্তায় দেখা যায়। তাঁদের কথায়, ‘‘এটা কন্টেনমেন্ট জ়োন নাকি? আমাদের জানা নেই তো!’’

মাস্কে গরম:

লকডাউনে অলিগলিতে খোলা দোকান। নেই সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক। শনিবারও এমন ছবি দেখা গেল। শহরের পূর্ণিয়া মোড়ে এক ফল ব্যবসায়ীর মুখে দেখা মিলল না মাস্ক। প্রশ্ন করলে উত্তর দেন, ‘‘মাস্ক পরলে গরম লাগছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gour Banga Containment Zone Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE