Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Subrata Bakshi

বক্সীর বৈঠকের আগেই কাটমানি বিতর্ক, অস্বস্তিতে নেতৃত্ব

সুব্রত বক্সি

সুব্রত বক্সি

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২০ ০৭:২৮
Share: Save:

‘কাটমানি’ নিয়ে বিতর্ক যেন পিছুই ছাড়ছে না তৃণমূলের। সুব্রত বক্সির কোচবিহার সফরের মুখে ফের ‘কাটমানি’র অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ল।

রাজ্যের শাসক দলের কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবিদুল রহমান অভিযোগ করেন, কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। সেখানে দলেরই একাধিক নেতা ‘কাটমানি’ তুলছেন। তিনি দলের জেলা নেতৃত্ব এবং রাজ্য সভাপতিকে লিখিত ভাবে ওই অভিযোগ জানাবেন বলেও দাবি করেছেন।

রাজ্য সভাপতির সফরের মুখে দলের মধ্যে থেকেই এমন অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী ওই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “এরকম কোনও অভিযোগের কথা এখনও জানা নেই।”

লোকসভা নির্বাচনে এবারে কোচবিহারে হেরে গিয়েছে তৃণমূল। তার পরেই ‘কাটমানি’ বিতর্ক নিয়ে তোলপাড় হয় গোটা জেলা। একাধিক কাউন্সিলর থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সাধারণ মানুষের চাপে পড়ে ‘কাটমানি’র টাকা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হন। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে বর্তমানে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। দিনকয়েক আগে ‘দিদিকে বলো’ অভিযানেও একাধিক নেতার বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। আজ, বৃহস্পতিবার সুব্রত বক্সী কোচবিহারে পৌঁছবেন। শুক্রবার তাঁর কর্মিসভা রয়েছে। এই সময়ে ফের এমন অভিযোগে শোরগোল পড়েছে। সাবিদুল বিধায়কের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাঁকে জেলা ও রাজ্য নেতাদের সঙ্গেও মাঝেমধ্যে দেখা যায়। তাই তাঁর এমন অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে দল। দলের অন্দরেই অবশ্য আরও অভিযোগ উঠেছে, রাজ্য নেতারা বারবারই এমন অভিযোগের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও কার্যত কিছুই করেন না। আরও অভিযোগ, রাজ্য সভাপতি কোচবিহারে সফরের সময়ে প্রত্যেকবার নিয়ম করে ব্যক্তিগত ভাবে সম্পত্তি করার প্রসঙ্গ তুলে সতর্ক করলেও কোনও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। সাবিদুল অবশ্য বলেন, “আমার কাছে কিন্তু নির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে। একাধিক কাজে কাটমানি নেওয়া হচ্ছে। কারা নিচ্ছে এবং কীভাবে নিচ্ছে সব জানিয়ে লিখিত ভাবে জেলা ও রাজ্য সভাপতিকে জানাব।”

বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতেই এই সময়ে উন্নয়নমূলক কাজের টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন বিরোধী দলের নেতারা। বিজেপির কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “অঞ্চল থেকে জেলাস্তরের তৃণমূল নেতা পাঁচ-ছয় বছর আগে কী ছিলেন, আর এখন কী হয়েছেন, তা সবাই জানে। কেউ দালান তৈরি করেছেন। কেউ দামি গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ান। তাই তৃণমূলে এটাই স্বাভাবিক।”

সামনেই পুরসভার নির্বাচন। তার আগে এমন বিষয় হাতছাড়া করতে চায় না বিজেপি। তৃণমূল অবশ্য স্বাভাবিক ভাবেই বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এ দিন শাসক দলের পাল্টা দাবি, বিজেপি নেতাদের অনেকেই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত। কোচবিহার জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “দুর্নীতির অভিযোগে নিয়ম করে ব্যবস্থা নেয় তৃণমূল সরকার। দলীয় ভাবেও কোনও ব্যক্তিকেই ছাড় দেওয়া হয় না এই দলে। এমন নজির অন্য কোনও দলে নেই। তাই দুর্নীতি নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ একেবারেই গুরুত্বহীন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Subrata Bakshi Bribe TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE