Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বন্দুক নিয়ে হইচই

রাত তখন সাড়ে এগারোটা। সঙ্গীকে নিয়ে মোটরবাইকে চেপে শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কি মোড় লাগোয়া এলাকার এক নার্সিংহোমে হঠাৎ হাজির এক ব্যবসায়ী। তার পরের কিছুক্ষণ পিস্তল নিয়ে হুমকি, দাপাদাপি এবং শেষে বাইরে বেরিয়ে শূন্যে গুলি। মঙ্গলবার দুপুরে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আতঙ্ক: ভিড় জমেছে শহরের সেই নার্সিংহোমের সামনে। নিজস্ব চিত্র

আতঙ্ক: ভিড় জমেছে শহরের সেই নার্সিংহোমের সামনে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৮ ১৭:৩৪
Share: Save:

রাত তখন সাড়ে এগারোটা। সঙ্গীকে নিয়ে মোটরবাইকে চেপে শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কি মোড় লাগোয়া এলাকার এক নার্সিংহোমে হঠাৎ হাজির এক ব্যবসায়ী। তার পরের কিছুক্ষণ পিস্তল নিয়ে হুমকি, দাপাদাপি এবং শেষে বাইরে বেরিয়ে শূন্যে গুলি। মঙ্গলবার দুপুরে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের অভিযোগ, রোগী বা চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও কাজে নয়, মালিকের খোঁজে এসে দাদাগিরি করেছেন অভিযুক্ত ব্যবসায়ী।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের নাম মনোজ সিংহ। তিনি সিগারেট প্রস্তুতকারী সংস্থার ডিস্ট্রিবিউটর। দুই মাইল এলাকার দফতর এবং গুদাম রয়েছে। নার্সিংহোমটি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই তাঁর বাড়ি। দ্বিতীয় অভিযুক্তের নাম প্রমোদ সিংহ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, গভীর রাতে নার্সিংহোমে ঢুকে সেখানে রিসেপশনে থাকা কর্মীকে রিভলভার বার করে খুনের হুমকি দেন অভিযুক্ত। এই ঘটনা চোখের সামনে দেখে নার্সিংহোমের কর্মীরা এবং তখন সেখানে থাকা রোগীর আত্মীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজনেরা গোলমাল শুনে সেখানে এসে পড়েন। তাঁদেরই কেউ কেউ অভিযুক্তকে বুঝিয়ে বাইরে নিয়ে যান। অভিযোগ, সেই সময়ে তিনি রিভলভার থেকে শূন্যে গুলি ছোড়েন।

রাতের সেই আতঙ্ক কাটিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানাতে কিছুটা দেরিই হয় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের। তার আগে বাড়িতেই ছিলেন মনোজ। সেই সময়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘রাতে নার্সিংহোমের সামনে ভিড় দেখে দাঁড়াই। লোকজনের সঙ্গে কথা বলি। আমার সঙ্গে এক যুবক ছিল, এটা ঠিক। তবে কে কী করেছে জানি না। আমি তো বাড়ি চলে এসেছিলাম।’’

নার্সিংহোমের নিরাপত্তাকর্মী নিরঞ্জন সাহার দাবি কিন্তু উল্টো। তিনি জানান, ‘‘মনোজ সিংহ বাইকে চেপে এসে মালিকের খোঁজ করেন। তার পরে রিসেপশনে গিয়ে রিভলভার দেখিয়ে হুমকি দিতে থাকেন।বাইরে আসার পর মনোজবাবুর সঙ্গী আকাশের দিকে গুলি চালায়। ভয়ে গুটিয়ে গিয়েছিলাম।’’
রিসেপশনের কর্মী বিশাল মাহাতো বলেন, ‘‘আমাকে যে ভাবে রিভালভার দেখাল, খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, গুলি না চালিয়ে দেয়!’’

অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। সিসিটিভি ফুটেজও পরীক্ষা করেছে। তার পরে মনোজের বাড়ি গেলে তাঁকে কিন্তু আর পাওয়া যায়নি। বিকেলে আর এক দফা তাঁরা অভিযুক্তদের বাড়ি, সিগারেট সংস্থার অফিসেও যান। মনোজবাবুর বাড়ির লোকজন, অফিসের কর্মীরা জানান— জরুরি দরকার উনি বাইরে চলে গিয়েছেন। কোথায় আছেন কেউ জানে না। দ্বিতীয় অভিযুক্তও এই ঘটনার পরে পলাতক।

শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘অভিযুক্ত দু’জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ নার্সিংহোমের মালিকপক্ষ অবশ্য বিষয়টি নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাননি। মালিক উজ্জ্বল শর্মা বলেন, ‘‘চিকিৎসার কাজে ব্যস্ত আছি। এখন কিছু বলতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Businessman Gunman Fear Nursing Home
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE