Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দুই পাহাড়ই বৈঠকে খুশি

গ্রীষ্মের শুরুতেই দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের জেরে একটা জমজমাট পর্যটন মরসুমের আশায় বুক বাঁধছেন সিকিম-দার্জিলিং-কালিম্পং-ডুয়ার্সের ব্যবসায়ীরা।

হাস্যমুখ: সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিঙের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার উত্তরকন্যায়। নিজস্ব চিত্র

হাস্যমুখ: সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিঙের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার উত্তরকন্যায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ০২:১৪
Share: Save:

গ্রীষ্মের শুরুতেই দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের জেরে একটা জমজমাট পর্যটন মরসুমের আশায় বুক বাঁধছেন সিকিম-দার্জিলিং-কালিম্পং-ডুয়ার্সের ব্যবসায়ীরা। তাই বৈঠক শেষ হতেই দুই মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব সিকিম (টাস) এবং দার্জিলিঙের ট্যুর অপারেটররা। উভয় তরফেই জানানো হয়েছে, দুই প্রতিবেশী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের পরে একে অপরকে ‘বন্ধু’ বলে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাসের প্রভাব পড়বে সর্বত্রই।

টাস-এর উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সতীশ বরদেওয়া বলেন, ‘‘যাবতীয় ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটল। দুই রাজ্যই এতে উপকৃত হবে। দুই মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।’’ ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সন্দীপন ঘোষ জানান, এমনিতেই গত গ্রীষ্মের মরসুমের শেষ পর্ব থেকে কোনও ব্যবসা হয়নি। তাই চলতি মরসুমে পর্যটন, পরিবহণের জটিলতা কাটবে কী ভাবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল এ রাজ্যের ট্যুর অপারেটরদের। এ বার দুই মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পরে অফিসাররা দ্রুত সমাধান সূত্র বার করলে আসন্ন গ্রীষ্মের পর্যটনে দুই পড়শি রাজ্যেই ভিড় উপচাবে বলে তাঁরা মনে করেন।

এ দিনের বৈঠকের পরে পাহাড়-ডুয়ার্সের ট্যুর অপারেটরদের মধ্যেও খুশির ছোঁয়া। শিলিগুড়ির ট্যুর অপারেটর সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘দেশ-বিদেশের ট্রাভেল এজেন্টরা সিকিম-দার্জিলিং নিয়ে সব খবরই রাখেন। দার্জিলিঙের গোলমালে সিকিমের ভূমিকা বা গাড়ি চলাচল নিয়ে কড়াকড়ির কথা শুনে অনেকেই শঙ্কিত ছিলেন। এ দিনের বৈঠকের পরে সেই আশঙ্কা কেটে যাবে।’’

সম্প্রতি সিকিমের সঙ্গে পরিবহণ চুক্তি বাতিল করে নবান্ন। তাতেই আসন্ন মরসুমে বহু কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কায় পড়ে পর্যটন নির্ভর সিকিম। হইচই বাঁধিয়ে দেয় সে রাজ্যে বিরোধী দল সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা (এসকেএম)। তারা রোজই পবন চামলিঙের দলকে তুলোধোনা করছিল। তাই দুই মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পরে সিকিমের শাসক দল সিকিম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টও (এসডিএফ) ঘোষণা করেছে, বিরোধীরা যতই সমালোচনা করুন, তাঁদের নেতা চামলিংয়ের উদ্যোগেই দুই রাজ্যের মধ্যে যাবতীয় ক্ষেত্রে আদানপ্রদান বাড়তে চলেছে। দুই মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পরে দার্জিলিঙের আমজনতাও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। দার্জিলিঙের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি অফিসার সুনদেন লেপচা বলেন, ‘‘আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছে সিকিমে। জামাইয়ের গাড়ির ব্যবসা দার্জিলিং ও সিকিম দু’জায়গাতেই। গত জুন মাস থেকে ব্যবসা প্রায় বন্ধ ছিল। সেই সমস্যা এ বার মিটবে বলে মনে হচ্ছে।’’ জিটিএ-র তরফেও দুই মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ বলেন, ‘‘একটা অবিশ্বাসের বাতাবরণ থাকলে দার্জিলিং-সিকিমের আদানপ্রদান কখনও লাভজনক হবে না। দু’টি পর্যটন নির্ভর এলাকাকে মিলেমিশে থাকতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE