Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জঙ্গলের ঘেরাটোপেই বাঘ প্রজনন কেন্দ্র 

বেঙ্গল সাফারি পার্কের অধিকর্তা ধর্মদেও রাই বলেন, ‘‘সাফারি পার্কের সঙ্গেই প্রজনন কেন্দ্র হবে তা গত বছর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আমরা সেন্ট্রাল জু অথরিটির ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তা এসে যেতেই কাজ শুরু হয়েছে।’’

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫২
Share: Save:

স্বাভাবিক জঙ্গলের পরিবেশে তৈরি হতে চলেছে বাঘের প্রজনন কেন্দ্র। শিলিগুড়ি শহরের উপকণ্ঠে বেঙ্গল সাফারি পার্কের পিছনের গভীর জঙ্গল, ঝোরায় ঘেরা অংশে স্থায়ী ‘বাঘ প্রজনন কেন্দ্র’ তৈরির অনুমতি দিল সেন্ট্রাল জু অথরিটি। রাজ্যে প্রথমবার এমন বাঘ প্রজনন কেন্দ্র গড়ে উঠবে বলে জানাচ্ছেন রাজ্যের বনকর্তাদের একাংশ। সম্প্রতি অনুমোদন মেলার পরেই রাজ্যের বন দফতর প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে ওই কেন্দ্রের পরিকাঠামো তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

বেঙ্গল সাফারি পার্কের অধিকর্তা ধর্মদেও রাই বলেন, ‘‘সাফারি পার্কের সঙ্গেই প্রজনন কেন্দ্র হবে তা গত বছর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আমরা সেন্ট্রাল জু অথরিটির ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তা এসে যেতেই কাজ শুরু হয়েছে।’’ তিনি জানান, এই প্রজনন কেন্দ্রটি খাঁচার মধ্যে প্রজননের যে প্রক্রিয়া চলে সেরকম নয়, জঙ্গলে ছাড়া অবস্থায় বাঘেদের প্রজনন হবে।

বন দফতর সূত্রের খবর, মহানন্দা অভয়ারণ্যের প্রায় সাড়ে ৪ হেক্টর জঙ্গল এলাকা স্থায়ী তারজালি, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরার কাজ শুরু হতে চলেছে। এই এলাকার মধ্যেই আলাদা করে বাঘেদের ‘নাইট শেল্টার’ তৈরি হচ্ছে। চিকিৎসার জন্য অথবা গর্ভধারণের পরে প্রসব ও শাবকদের বড় হওয়ার জন্য কমবেশি চারটি শেল্টার বা আস্তানা তৈরি হওয়ার কথা। আগামী মার্চের মধ্যে কাজ শেষ হতেই বাঘ আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। বেঙ্গল সাফারি পার্কের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা নতুন প্রজনন কেন্দ্রের পরিকাঠামো তৈরির কাজ দেখভাল করবেন।

বন দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, প্রজনন কেন্দ্রের নথিপত্রে শুধুমাত্রের বাঘের উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রটি করা হলেও প্রয়োজনে চিতাবাঘ বা তুষারচিতার প্রজননের জন্যও ব্যবহার করার সুযোগ রাখা হয়েছে। মার্চের মধ্যে কাজ শেষ হতেই সেন্ট্রাল জু অথরিটিকে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে। তারপরে তাঁরা পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে বাঘ পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করবে।

২০১৬ সালে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার শীলা এবং স্নেহাশিসকে নন্দনকানন থেকে কলকাতা চিড়িয়াখানা হয়ে বেঙ্গল সাফারিতে আনা হয়। তারপরে পার্কের স্বাভাবিক পরিবেশেই তিন শাবকের জন্ম দেয় তারা। রিকা, কিকা এবং ইকা ওই দম্পতির তিন সন্তান। গতবছর সবচেয়ে ছোট শাবক ইকা মারা যায়। এর মধ্যে জামশেদপুর থেকে আরেকটি পুরুষ রয়্যাল বেঙ্গল বিভানকে আনা হয়। কিছুদিন আগে আড়াই বছরের স্নেহাশিসকে ‘ক্যাপটিভ ব্রিডিংয়ে’র জন্য কলকাতার চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে। এখন সাফারি পার্কে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সাফারিতে বাঘ রয়েছে মোট ৪টি। এরমধ্যে রিকা ও কিকার বয়স বছর দেড়েক।

এই বছর ১ অক্টোবর, বিভান এবং শীলাকে নাইট শেল্টারে রেখে নতুন প্রজন্মের শাবককে বাইরে ছাড়া হয়েছে। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এনক্লাজোরে ছাড়া হয় বিভান, শীলাকে। এদের ছাড়াও বাইরে থেকে বাঘ এনে প্রজননের কাজ চলবে বলে বন দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE