Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সস্মিতাকে গাড়ি উপহার চন্দনার

শিশু বিক্রিতে সহযোগিতা করে বিনিময়ে গাড়ি উপহার পেয়েছিলেন সরকারি পদে থাকা এক ব্যক্তি। জলপাইগুড়ির হোম থেকে শিশু বিক্রির তদন্তে এমনই তথ্য হাতে এসেছে তদন্তকারীদের।

ধৃত: চন্দনা চক্রবর্তী  নিজস্ব চিত্র

ধৃত: চন্দনা চক্রবর্তী নিজস্ব চিত্র

অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৭ ০১:৫৮
Share: Save:

শিশু বিক্রিতে সহযোগিতা করে বিনিময়ে গাড়ি উপহার পেয়েছিলেন সরকারি পদে থাকা এক ব্যক্তি। জলপাইগুড়ির হোম থেকে শিশু বিক্রির তদন্তে এমনই তথ্য হাতে এসেছে তদন্তকারীদের।

চালক-সহ চারজনের বসার জায়গা রয়েছে ওই গাড়িতে। বিলাসবহুল গাড়িটির দাম প্রায় ৭ লক্ষ টাকা একটি ড্রাফটে মেটানো হয়েছে। শিশু বিক্রি কাণ্ডে অভিযুক্ত হোমের কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তীর নির্দেশেই জলপাইগুড়ির রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ড্রাফটটি কেনা হয় বলে অভিযোগ।

চন্দনার পরিবারের তরফে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। শিলিগুড়ির সেবক রোডের একটি গাড়ির শোরুমে ড্রাফটি জমা পড়ে বলে দাবি। কার নামে গাড়ির নথি তৈরি হয়েছিল তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা।

চন্দনা ছাড়াও তাঁর ভাই মানস ভৌমিক, হোমের কর্মী সোনালি মণ্ডলকে শিশু বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। শিশু বিক্রিতে জড়িত থাকা এবং সাহায্য করার অভিযোগে বিজেপি নেত্রী জুহি চৌধুরী, সাসপেন্ড হওয়া দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলার দুই শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মৃণাল ঘোষ এবং তাঁর স্ত্রী সাস্মিতা, দার্জিলিং জেলার শিশু কল্যাণ সমিতির সদস্য দেবাশিস চন্দকেও গ্রেফতার করেছে সিআইডি। সিআইডির তরফে দাবি করা হয়েছে চন্দনার থেকে মোটা টাকা নিয়ে মৃণাল-সাস্মিতা নিয়ম ভেঙে একের পর এক শিশুকে নির্দিষ্ট হোমে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। শিশু বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার সুবাদে ওই দম্পতি বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি তৈরি করেছিল বলে সিআইডির দাবি। শিলিগুড়ির কলেজ পাড়ায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাট সহ আরও কী কী সম্পত্তি সরাসরি তাঁদের নামে কেনা হয়েছে তাও খতিয়ে দেখছে সিআইডি।

সস্মিতা ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

শিশু বিক্রিতে সম্পত্তি এবং লেনদেনের হদিশ খুঁজতে গিয়েই গাড়ির তথ্য এসেছে তদন্তকারীদের হাতে। কিছুদিনের ব্যবধানে শিলিগুড়ির সেবক রোডের শোরুম থেকে দু’টি গাড়ি কেনা হয় বলে জেনেছে তদন্তকারীরা। একটি গাড়ি নিজেদের ব্যবহারের জন্য রেখে হোম কর্তৃপক্ষ আরেকটি গাড়ি কাউকে উপহার দেয়। মৃণাল-সাস্মিতার আইনজীবী অলোকেশ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমার মক্কেলের যে গাড়িটি রয়েছে তা ওঁরা নিজেরাই কিনেছেন। বিলাসবহুল সম্পত্তির যে দাবি করা হচ্ছে তাও ঠিক নয়। কলেজ পাড়ায় একটি ফ্ল্যাট ছাড়া আর কিছু নেই। তদন্ত প্রভাবিত করতেই এ সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’

সিআইডি সহ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা শাখা, জেলা প্রশাসন, দুর্নীতি বিরোধী সেল সহ একাধিক এজেন্সি শিশু বিক্রির তদন্ত করছে। কেন্দ্রীয় শিশু আয়োগ এমনকী দত্তকের লাইসেন্স দেওয়া সংস্থা কারা-র প্রতিনিধিরাও জলপাইগুড়ি এসে তথ্য সংগ্রহ করছে। সেবক রোডের ওই শোরুমেও তদন্তকারীরা গিয়ে খোঁজখবর করেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকেও নথি সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। চন্দনার আইনজীবী অত্রি শর্মার মন্তব্য, ‘‘চন্দনা চক্রবর্তী কাউকে গাড়ি উপহার দিয়েছেন বলে কোনও তথ্য আমার জানা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE