Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Chess Tournament

চৌষট্টি খোপে ‘চোখে চোখ’ রেখে টক্কর বলরাম, সুবোধদের

মালদহের এক বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে জেলায় প্রথম দাবা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি সংস্থাকে সহযোগিতা করেছে মালদহ জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে দুই পুরসভাও।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

অভিজিৎ সাহা
ইংরেজবাজার শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:৫০
Share: Save:

দাবার চৌষট্টি খোপের খেলায় মাতবে মালদহ। যেখানে দুই প্রতিপক্ষের মধ্যে একদিকে থাকবেন দৃষ্টিহীনরা। সাদা-কালো বোর্ডের খেলায় কিস্তিমাত করতে তাই জোর কদমে শুরু হয়ে গেল যুদ্ধ। শনিবার মালদহের ইংরেজবাজার শহরের একটি ক্লাবে অনুষ্ঠিত হল দু’দিনের সারা বাংলা দাবা প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় অন্যান্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অংশগ্রহণ করবেন দৃষ্টিহীনেরাও। সেই টক্কর দেখতেই প্রতিযোগিতাকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ তৈরি হয়েছে সারা ইংরেজবাজার শহরেই।

মালদহের এক বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে জেলায় প্রথম দাবা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি সংস্থাকে সহযোগিতা করেছে মালদহ জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে দুই পুরসভাও। এ দিন থেকে শুরু হয় দাবা প্রতিযোগিতা। আজ, রবিবার পর্যন্ত চলবে তা। জানা গিয়েছে, প্রতিযোগিতায় মোট ১২৫ জন দাবাড়ু অংশ গ্রহণ করবেন। এর মধ্যে ৭৫ জন দৃষ্টিহীন দাবাড়ু রয়েছেন। একই সঙ্গে মহিলারাও রয়েছেন। মালদহ সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দাবাড়ুরা খেলায় অংশ গ্রহণ করেছেন বলেও জানান উদ্যোক্তারা। এ দিন দৃষ্টিহীনদের নিজেদের মধ্যেই দাবা প্রতিযোগিতা হয়। চোখে না দেখলেও দৃষ্টিহীন দাবাড়ুদের ‘চাল’ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন অনেকেই। এ দিনের খেলার সেরাদের সঙ্গে কালকের খেলায় যাঁরা সেরা হবেন তাঁদের খেলা হবে বলে খবর।

মালদহের হবিবপুর এবং গাজলের সুবোধ মণ্ডল, বলরাম হাঁসদারা চোখে না দেখতে পান না ঠিকই, তারা প্রত্যেকেই পেশাদার দাবা খেলোয়াড়। তাঁরা জেলা তো বটেই, এ ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দাবা খেলায় অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা জানালেন, দাবা বুদ্ধির খেলা। তাই চোখে দেখতে না পেলেও বুদ্ধি দিয়েই দাবা খেলে সফল হয়েছেন বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। এবারের প্রতিযোগিতাতেও অন্যান্যদের কিস্তিমাত করবেন বলে আশাবাদী বলরাম, সুবোধেরা।

এ দিন তাঁদের উৎসাহ দিতে হাজির ছিলেন মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র, পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীরা। খেলা দেখে প্রশংসাও করেছেন জেলাশাসক।

তিনি বলেন, “চোখে না দেখলেও তাঁদের দাবার চাল অনেকেই টেক্কা দেবে। আশা করছি দু’দিনের দাবা খেলায় শহরের মানুষও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে শামিল হবেন।’’ আর নীহার বলেন, “এখন আমাদের চোখ থাকতেও অন্ধ হয়ে গিয়েছে কার্যত। মোবাইল, ইন্টারনেটের জালে আমরা নিজেদের জড়িয়ে ফেলেছি। দৃষ্টিহীন ভাই-বোনেদের খেলা বিশেষ বার্তা দিচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chess Tournament English Bazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE