প্রতীকী ছবি।
চিকুনগুনিয়ার আতঙ্ক ছড়ানোর প্রেক্ষিতে, রাজ্য সরকার এবং শিলিগুড়ি পুরসভার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব যেন আরও বিশ্রী ভাবে বেরিয়ে পড়ল। বুধবারই পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকুনগুনিয়ার উপসর্গ নিয়ে ভোগা দু’জনের রক্তে ওই রোগের জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। তারপরেই পুরসভার একটি দল এলাকা পরিদর্শন করতে যায়।
বৃহস্পতিবার পুরসভার মেয়র পারিষদের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকের শেষে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই এলাকায় চিকুনগুনিয়া হয়েছে বলে আমাদের স্বাস্থ্য দফতর কিছু জানায়নি। তবে আতঙ্ক যেহেতু ছড়িয়েছে, তাই আমরা আরও বেশি করে মশার তেল এবং ধোঁয়া ছড়াব ওখানে।’’ দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘৫ জনের রক্তে চিকুনগুনিয়ার জীবাণু পাওয়া গিয়েছে।’’ প্রলয়বাবু জানান, আগে তাঁরা স্বাস্থ্যভবনে বিষয়টি জানাবেন। তারপর সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতর এবং সংস্থাকে।
পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক সঞ্জীব মজুমদার জানিয়েছেন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকুনগুনিয়ার আতঙ্ক দেখা গিয়েছে। তা স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে। তবে এখনও কোনও রিপোর্ট ওদিক থেকে আসেনি।
এই ইস্যুতে পুর কর্তৃপক্ষকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি বিরোধী দলের কাউন্সিলররা। পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের কাছে টাকা নিয়ে তারপর তা খরচ করতে পারছে না পুরসভা।’’ রঞ্জনবাবুর দাবি, পুরসভা এ বছর এপ্রিল মাসে প্রায় ৫৬ লক্ষ টাকা সচেতনতা বাড়াতে এবং ১৭ লক্ষ টাকা পেয়েছিল ধোঁয়া ছড়ানোর মেশিন কেনার জন্য কিন্তু সেগুলি খরচ করতে পারেনি পুরসভা। পুরসভার তরফে এসব দাবি ঠিক নয় বলে দাবি করা হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকনগুনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে কেউ ভর্তি নেই।’’
২৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মিলনপল্লির স্টেশন ফিডার রোডের ব্যবসায়ী কৌশিক রায় বলেন, ‘‘প্রথমে আমার বছর দু’য়েকের ছেলে আক্রান্ত হয়। এরপর আমার মা, আমার দোকানের কর্মী এবং বাড়িতে থাকা ভাড়াটেদের মধ্যে অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন।’’ কৌশিকবাবুর মতে অন্তত ২৬ জনের রক্তে চিকনগুনিয়া ধরা পড়েছে।
২৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অঙ্কুর দাস বলেন, ‘‘ওয়ার্ডে মশা মারার মেশিন দিয়ে লার্ভা মারার জন্য স্প্রে করা হয় না। আবর্জনায় ভরে থাকলেও সেসব পরিষ্কারের ব্যাপারে স্থানীয় কাউন্সিলর কোনও উদ্যোগ নেন না।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় বেশ কিছু বহুতল তৈরির কাজ চলছে। সেখানে জমে থাকা জলে মশা দিব্যি বংশ বিস্তার করছে। এ দিন পুরসভার কর্মীরা গিয়ে কৌশিকবাবুর বাড়ির পিছনের নালাগুলিতে ব্লিচিং পাউডার, এবং মশা মারার তেল স্প্রে করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy