Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলের সমস্যা মেটান, বলছেন ‘প্রধানমন্ত্রী’ 

রাজ্য শিক্ষা দফতরের সাম্প্রতিক নির্দেশ, গ্রামাঞ্চলের প্রাথমিক স্কুলে তৈরি হচ্ছে শিশু সংসদ। এ দিন শিশু দিবসে অমৃতি পঞ্চায়েতের বড় মোহনপাড়ার এই স্কুলের তেমনই এক শিশু সংসদের ভূমিকা নজর কাড়ল শিক্ষা তথা প্রশাসনিক আধিকারিকদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৫
Share: Save:

বুধবার তখন দুপুর প্রায় ১২টা। মালদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের ঘরে প্রধানমন্ত্রীর প্রবেশ! সঙ্গে উপস্থিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে খাদ্য এবং ক্রীড়ামন্ত্রীও। সচকিত হয়ে উঠলেন চেয়ারম্যান। ইতিমধ্যে দফতরে নিজেদের কাজকর্ম ফেলে তাঁর ঘরে ছুটে এসেছেন অন্য আধিকারিক, কর্মীরা। এর পরে সবার সামনে সপার্ষদ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘আমাদের স্কুলের একাধিক সমস্যা সমাধানের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে এসেছি আমরা।’’

সাত-আট থেকে দশ বছরের সব বাচ্চা। ইংরেজবাজার ব্লকের একটি প্রাথমিক স্কুল রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠের ছাত্রছাত্রী সবাই। সেইসঙ্গে স্কুলের শিশু সংসদের প্রতিনিধিও। তারাই এ দিন এসেছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান আশিস কুণ্ডুর কাছে, স্কুলেরই দীর্ঘ দিনের কয়েকটা সমস্যার কথা বলতে। সেই সঙ্গে সমাধানের প্রতিশ্রুতি আদায় করতে। স্কুল সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রায় ৭১ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। শিক্ষক মাত্র তিন জন। অভিযোগ, স্কুলের সীমানায় প্রাচীর নেই। পাশেই কালিন্দী নদী। ফলে যে কোনও সময়ের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েই যায়। পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ না থাকায় বারান্দায় বসে ক্লাস করতে হয় পড়ুয়াদের। শৌচালয় ও পানীয় জলেরও সমস্যা রয়েছে। সে সব সমস্যা সমাধানের দাবিতেই স্কুলের শিশু সংসদের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী স্থায়ী সমিতির সদস্যদের নিয়ে এ দিন হাজির হয়েছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের দফতরে।

শিশু সংসদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বজিৎ মণ্ডল চেয়ারম্যানের কাছে জানায়, “গরু-ছাগল, কুকুর অবাধে স্কুলে ঢুকে মিড-ডে মিলের থালায় মুখ দেয়। অবিলম্বে প্রাচীর প্রয়োজন স্কুলে।’’ প্রধানমন্ত্রীর পাশেই বসেছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রী বৈশাখী দাস। সে জানায়, ‘‘স্কুলের শৌচাগার খুব ছোট। জল জমে যায়। খুব দুর্গন্ধ বার হয়। স্কুলে টিউবওয়েলও মাত্র একটি।’’

খুদে ‘মন্ত্রী’দের মুখে অভাব-অভিযোগ শুনে বিস্মিত চেয়ারম্যান। তিনি সকলকে নিয়ে যান ইংরেজবাজার ব্লকের বিডিও দেবর্ষি মুখোপাধ্যায়ের কাছে। দেবর্ষি বলেন, ‘‘অভিযোগ খুবই গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।” আশিস বলেন, ‘‘শিশু সংসদের উদ্দেশ্য পড়াশোনার পাশাপাশি শিশু মনের বিকাশ ঘটানো। এ দিন ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা নির্ভয়ে স্কুলের সমস্যার কথা জানিয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে তার সমাধান করা হবে।” শিশু সংসদের মন্ত্রী ও তাদের স্থায়ী সমিতির সদস্যদের হাতে মিষ্টি ও চকোলেট উপহার হিসেবে দেন ব্লক প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কর্তারা।

রাজ্য শিক্ষা দফতরের সাম্প্রতিক নির্দেশ, গ্রামাঞ্চলের প্রাথমিক স্কুলে তৈরি হচ্ছে শিশু সংসদ। এ দিন শিশু দিবসে অমৃতি পঞ্চায়েতের বড় মোহনপাড়ার এই স্কুলের তেমনই এক শিশু সংসদের ভূমিকা নজর কাড়ল শিক্ষা তথা প্রশাসনিক আধিকারিকদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE