নেতাজি জন্মোৎসব কমিটির মিছিলে পরেশ অধিকারী। নিজস্ব চিত্র
এতদিন অনুষ্ঠান হত একটিই, ধুমধাম করেই। প্রধান আয়োজকের দলবদলের সঙ্গে এবার অনুষ্ঠান ভেঙে হল দু’টি। ফলে জৌলুসও কমল।
মেখলিগঞ্জ শহরে দীর্ঘদিন ধরেই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন সবচেয়ে বড় করে পালিত হয়ে আসছে হাইস্কুল মাঠে। সেই অনুষ্ঠানের কর্ণধার ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা পরেশচন্দ্র অধিকারী। গত বছর অগস্টে তিনি যোগ দেন শাসক দলে। তবে দল ছাড়লেও নেতাজির জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছাড়লেন না পরেশ। মেখলিগঞ্জ নৃপেন্দ্রনারায়ণ মেমোরিয়াল ক্লাব ও নর্থ বেঙ্গল সায়েন্স অ্যান্ড কালচারাল সোসাইটির সহযোগিতায় যে নেতাজি জন্মোৎসব কমিটি তৈরি হয়েছে, সেই কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন তিনি। এবং অনুষ্ঠান তাঁর পুরনো জায়গা মেখলিগঞ্জ হাইস্কুলের মাঠেই। তাঁর এই ‘আধিপত্যে’র ফলস্বরূপ পিছু হঠতে হয়েছে তাঁর পুরনো দল ফরওয়ার্ড ব্লককে। বাধ্য হয়েই তারা এবার নেতাজির জন্মজয়ন্তী পালন করল মেখলিগঞ্জ হাইস্কুলেরই তথ্যকেন্দ্র সংলগ্ন মাঠে।
বুধবার দুই অনুষ্ঠান ঘিরেই এবার বাড়তি উৎসাহ ছিল শহরের সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক মহলের। অনেকেরই প্রশ্ন ছিল, পরেশবাবু এবার কি আলাদা করে অনুষ্ঠান করবেন, নাকি পুরনো অনুষ্ঠানেই যোগ দেবেন। তবে কয়েকদিন আগে থেকে পরেশবাবুর অবস্থান জানতে পেরে দুই অনুষ্ঠান ঘিরে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় সেটাতেও নজর ছিল অনেকেরই।
নতুন জায়গায় নেতাজির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তিনদিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ফরওয়ার্ড ব্লক। এছাড়া, এ দিন সকালে মেখলিগঞ্জ শহরে বাদ্যযন্ত্র সহযোগে নেতাজির প্রতিকৃতি নিয়ে দু’টি শোভাযাত্রা বের হয়। দু’টি শোভাযাত্রাতেই এলাকার সাধারণ মানুষ সামিল হন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, নেতাজি জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে কয়েক দশক ধরেই মেখলিগঞ্জে বড় ধরনের একটিই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। তবে শহরে এই বছরই যে প্রথম দু’টি শোভাযাত্রা বেরিয়েছে তা নয়। এর আগেও মেখলিগঞ্জে দু’টি শোভাযাত্রা বের হয়েছিল। ১৯৯২ সালে তিনবিঘা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। তার জেরে দলের নেতা কমল গুহ এবং পরেশচন্দ্র অধিকারীরা সারা ভারত ফরওয়ার্ড ব্লক দল থেকে বেরিয়ে এসে ফরওয়ার্ড ব্লক (সমাজতান্ত্রিক) দল তৈরি করেন। ১৯৯৩ সালে নেতাজির জন্মদিনে মেখলিগঞ্জ শহরে সারা ভারত ফরওয়ার্ড ব্লক এবং ফরওয়ার্ড ব্লক (সমাজতান্ত্রিক)— এই দু’টি দল আলাদা আলাদা শোভাযাত্রা বের করেছিল। সেই কারণে দু’টি শোভাযাত্রা এর আগেও দেখেছে শহরবাসী। তবে এবার জৌলুস কমেছে অনুষ্ঠান দু’ভাগ হওয়ায়। তাঁরা জানান, এ বছর অনুষ্ঠান পুরো শেষ না হওয়া পর্যন্ত দু’টি অনুষ্ঠান ঘিরেই নজর থাকবে সকলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy