Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বোমায় উত্তপ্ত তুফানগঞ্জ

তার আগে এ দিন বিকেল ৩টে থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে ঘুঘুমারি বাজার উত্তপ্ত হয়ে থাকে। আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০৫:৪৮
Share: Save:

জনসংযোগ যাত্রাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও বিজেপির লড়াইয়ে বোমাবাজিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের ঘুঘুমারি বাজার। সেই সঙ্গে তুফানগঞ্জ শহর তৃণমূল কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে সাতটায় ঘটনা। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি সোমবার তিন জন মহিলা এবং বেশ কিছু পুরুষ কর্মী দ্বারা দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকা তৃণমূলের তুফানগঞ্জ শহর কার্যালয় খোলা হয়। তুফানগঞ্জে শহর তৃণমূল সভানেত্রী কৃষ্ণা ঈশর বলেন ‘‘আচমকাই বিজেপির কুড়ি জনের উপর দুষ্কৃতী আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে আমাদের উপর হামলা করে। আমার শাড়ি ধরে টানা হয়।’’ বিজেপির দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তারা যুক্ত নয়। এ দিন সন্ধ্যায় অন্যায় ভাবে পুলিশ বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে তিন জনকে বেধড়ক মারধর করে বলে দাবি করেছে গেরুয়া শিবির।

তার আগে এ দিন বিকেল ৩টে থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে ঘুঘুমারি বাজার উত্তপ্ত হয়ে থাকে। আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষ আতঙ্কে ছুটতে শুরু করে কিছু সময়ের জন্যে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায় কোচবিহার-মাথাভাঙা এবং দিনহাটা সড়কে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ঘটনায় বিজেপি পার্টি অফিস ভাঙচুরেরও অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল অবশ্য দাবি করেছে, বিজেপি তৃনমূলের অফিস দখল করে রেখেছে। এদিন তা দখলমুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ, ১০টির বেশি বোমা ফেলা হয়েছে।

বিজেপির তিন জনকে আটক করায় রাত পৌনে দশটা নাগাদ বিজেপি ব্যাপক জমায়েত করে তাদের দলীয় কার্যালয়ে সামনে। পুলিশ লাঠি চালায় বলে দাবি। বিজেপির অভিযোগ তাঁদের দশ জন কর্মী আহত হয়েছেন। বিজেপির কর্মীদের বাইক ভাঙচুর করার অভিযোগও উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়।

কোচবিহারের এক পুলিশ কর্তা বলেন, “পুলিশ নজর রাখছে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় সূত্রে দাবি, ঘুঘুমারি বাজার লোকসভা ভোটের পর থেকেই বিজেপির দখলে চলে যায়। এ দিন ওই এলাকায় জনসংযোগ যাত্রার ডাক দেয় তৃণমূল। বিকাল ৩টে থেকে মিছিল শুরু হওয়ার কথা ছিল তৃণমূলের। তার আগেই ঘুঘুমারিতে মিছিল বের করে বিজেপি। কাশ্মীরের পদক্ষেপে কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বেলা ১ টার মধ্যে মিছিল শেষ করে বিজেপি। ২টো থেকে বাজারের কাছে মাথাভাঙা রোডের পার্টি অফিসে জমা হন তৃণমূল কর্মীরা। সেখানে ছিলেন তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্যা শুচিস্মিতা দেববর্মা, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি খোকন মিয়াঁ, যুব নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিক, আজিজুল হকরা। তৃণমূলের অভিযোগ, মিছিল শুরু হওয়ার সময় থেকেই বাজারে বোমাবাজি শুরু করে বিজেপি। নানা জায়গায় লুকিয়ে থাকা বিজেপি কর্মীরা বোমা ছুড়তে শুরু কর। কিছু সময়ের জন্যে মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। অনেক তৃণমূল নেতা-কর্মী ফিরেও যান। পরে অবশ্য ফের মিছিল বের করে তৃণমূল।

বিজেপির অভিযোগ, বহিরাগতদের সশস্ত্র অবস্থায় নিয়ে গিয়ে ঘুঘুমারি বাজারে হামলা করে তৃণমূল। তাদের মিছিল থেকেই বোমা ছোড়া হয়। শুধু তাই নয়, ঘুঘুমারি বাজারে বিজেপির তিনটি পার্টি অফিস ভাঙচুর করে তৃণমূল কর্মীরা। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “পরিকল্পিত ভাবে এলাকায় সন্ত্রাস শুরু করেছে তৃণমূল। ঘুঘুমারিতে বোমাবাজি করে আতঙ্ক তৈরি করেছে। এ সব করে কোনও লাভ নেই। মানুষ আমাদের সঙ্গেই আছে।” তৃণমূল যুব নেতা অভিজিৎ বলেন, “বিজেপি আমাদের সমস্ত অফিস দখল করে রেখেছিল ঘুঘুমারিতে। এদিন তা মুক্ত করা হয়েছে। তাতে তারা বোমাবাজি করে।”

ঘুঘুমারি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির অভিযোগ, কিছু দুষ্কৃতী বাজারের একাধিক দোকানে হামলা চালিয়েছে। ওই ঘটনায়, আজ বুধবার, ২৪ ঘন্টার জন্যে ব্যবসা বন্‌ধ ডেকেছে ব্যবসায়ী সমিতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE