Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দলাদলির অন্ধকার ! প্রশ্নে বিদ্যুৎ দফতর

দফতরের এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর মন্তব্য, “লালের সেই দাপট এখন না থাকাই স্বাভাবিক! লড়াই তো তেরঙ্গার মধ্যেই। দুটি ইউনিয়ন তো।” দফতরের কর্মীদের একাংশের দাবি, এই ‘লড়াই’তেই বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:০১
Share: Save:

ভবনটিকে নতুনই বলা যায়। বছর পাঁচেক হবে, বিদ্যুৎ দফতরের নিজস্ব ভবন তৈরি হয়েছে জলপাইগুড়িতে। সেই দফতরের সদর দরজায় ঢোকার আগে থেকে নানা রঙের পোস্টার-ব্যানার!

প্রথম দরজা দিয়ে ভবনের ভিতরে ঢোকার পর তো সারা দেওয়াল জুড়ে পোস্টারে ছয়লাপ। তেরঙ্গা পোস্টারের মাঝে কয়েকটি লাল রঙের পোস্টারেরও দেখা মিলল। দফতরের এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর মন্তব্য, “লালের সেই দাপট এখন না থাকাই স্বাভাবিক! লড়াই তো তেরঙ্গার মধ্যেই। দুটি ইউনিয়ন তো।” দফতরের কর্মীদের একাংশের দাবি, এই ‘লড়াই’তেই বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী।

বুধবার টিয়াবনের প্রশাসনিক সভা থেকে বিদ্যুৎ দফতরে শুধুই ‘ইউনিয়নবাজি’ চলে নাকি প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই দফতরের কর্মীরাই অনেকে বলছেন, ইউনিয়নগুলি সর্বক্ষণ লড়তে থাকলে কাজের সময় পাওয়া যায় না এবং সুষ্ঠু ভাবে কাজও হয় না।

বিদ্যুৎ দফতরের চুক্তিভিত্তিক এবং স্থায়ী কর্মীদের পৃথক সংগঠন রয়েছে। বাম এবং তৃণমূলের ছত্রছায়াতেই সংগঠনগুলি চলে। দুই ক্ষেত্রেই তৃণমূলের দুটি করে সংগঠন রয়েছে কর্মীরাই জানাচ্ছেন, এই সংগঠনগুলি পরস্পরবিরোধী।

সম্প্রতি কয়েকটি ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেও আখেরে কোনও লাভ হয়নি। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি ডিভিশনাল অফিসের সাধারণ বিভাগে গিয়ে দেখা গেল চেয়ার টেবিল রয়েছে। কিন্তু কর্মী হাতে গোনা দু’জন। ঘরে থাকা কর্মীরা জবাব দিলেন, বদলি করে আনা সম্ভব হয়নি। এক কর্মীর কথায়, “এই বিভাগে কাদের বদলি করে আনা হবে তা নিয়ে শাসক দলের দুই সংগঠন একমত হয়নি। তাই পুরো প্রক্রিয়াটিই ঝুলে গিয়েছে।”

সংগঠনগুলির পারস্পরিক দলাদলিতে নতুন চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগেও জট বেধেছে জলপাইগুড়িতে। থমকে রয়েছে প্রক্রিয়া। এক একটি সাব স্টেশনে ৮ জন করে কর্মীর প্রয়োজন হলেও, আছেন মাত্র চার জন করে। যার প্রভাব পড়ছে পরিষেবাতেও। কর্মীর অভাবে প্রশাসনিক কাজে গাফিলতি চলছে বলে জানালেন কর্মীদের একাংশ।

এই গাফিলতিরই সরাসরি প্রভাব পড়ছে বিদ্যুৎ সরবরাহে। আলিপুরদুয়ারে টারটি ট্রান্সফর্মার বদল করার সিদ্ধান্ত নেয় বিদ্যুৎ নিগম। সূত্রের খবর, সে নির্দেশও জারি হয়। কিন্তু কাজ শুরুর আগেই তৃণমূলের একটি সংগঠন এসে বাধা দেয়।

তাদের দাবি, দলের আরেক গোষ্ঠীর মদতপুষ্ট কর্মীদের সুপারিশ মেনে কাজ হচ্ছে। যার পরিণতিতেই ট্রান্সফর্মারর বসানো হয়নি। বেশি চাহিদা হলেই অন্ধকারে ডুবে যায় আলিপুরদুয়ারের একাংশ।

একই অবস্থা কোচবিহারেও। চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের কতদিন কাজ করানো হবে তা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে কোচবিহারে অন্তত ৪০ জন কর্মীকে নিয়মিত কাজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। এক কর্মীর কথায়, “বড়কর্তাদেরও কিছু করার কথা থাকে না। দুই গোষ্ঠী তৃণমূলের। তাই কর্তারা কাউকেই চটাতে সাহস পান না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Electric Department Clash Union
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE