স্মৃতি: দিনহাটায় মৃত ছাত্রকে স্মরণ যুব সংগঠনের। নিজস্ব চিত্র
বেশ কিছু দিন ধরেই দলের জেলা স্তরের বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হচ্ছিল। জুলাইয়ে মাজিদ আনসারি খুনে তা প্রকাশ্যে চলে আসে। তারপরে অলকনিতাই দাসের খুনে তা গড়িয়ে গেল আরও অনেকটা। সম্প্রতি তৃণমূলের তরফে জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন সুব্রত বক্সীর সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে এর পরেই অলকনিতাই দাস খুনে অভিযুক্ত জেলা টিএমসিপি-র সভাপতি সাবির সাহা চৌধুরীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হল। টিএমসিপির জেলা সংগঠন ভেঙেও দেওয়া হয়েছে। আজ সেই কমিটিতে কারা আসবেন, তা নিয়েই এখন শুরু হয়েছে আলোচনা।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, টিএমসিপির নতুন কমিটিতে কারা থাকবেন, তা দেখে জেলায় দলের কোন গোষ্ঠীর প্রতাপ বাড়ছে, তার একটা দিশা পাওয়া যাবে। যদিও দলের জেলা নেতাদের বক্তব্য, এমন কোনও ভাবনা অপ্রয়োজনীয়। যাঁরা উপযুক্ত, তাঁরাই কমিটিতে থাকবেন।
কিন্তু তৃণমূল সূত্রেই খবর, দলে জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহর ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের অনুগতদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে।
বিরোধীদের স্পষ্ট বক্তব্য, কোচবিহারে তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রাশ টানতেই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কড়া হচ্ছে। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই কোচবিহারে যুব-তৃণমূল দ্বন্দ্ব তীব্র হয়। একপক্ষে, রবীন্দ্রনাথবাবু, উদয়নবাবু। অপরপক্ষে, সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের সভাপতি পার্থপ্রতিমবাবু, বিধায়ক মিহির গোস্বামী। পার্থবাবু একসময় রবীন্দ্রনাথ ঘনিষ্ঠ থাকলেও বর্তমানে দুজনের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। তবে তাঁরা সকলেই জানিয়েছেন, দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।
তৃণমূলেরই কিছু নেতার দাবি, জেলার ওই অবস্থার সুযোগ নিতে আসরে নেমে পড়ে বিজেপি। একাধিক এলাকায় নিজেদের সংগঠন মজবুত করতে প্রায় প্রতিদিন বৈঠক-সভা চলতে থাকে। বিজেপির দাবি, তৃণমূলের সাধারণ কর্মী থেকে-একাধিক নেতা তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে যে ফল ভালো হবে না তা বুঝেই গত ৫ অক্টোবরের বৈঠকে কোচবিহারে নতুন পর্য়বেক্ষক হিসেবে অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “তৃণমূল শৃঙ্খলাহীন দল। তা সবার কাছেই পরিষ্কার। পার্থবাবু বর্তমানে সাংসদ। তাই লোকসভা ভোটের মুখে তাঁকেই সামনে রাখছে দল। তাতে অবশ্য কোনও লাভ হবে না।”
পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, “যারা খুনে জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।” এদিন সাংসদ দিনহাটার বিধায়ক তথা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক উদয়ন গুহের সঙ্গেও দেখা করেন। উদয়নবাবুও বলেন, “অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি চাই। কে দোষী তা পুলিশি তদন্তেই উঠে আসবে।’’ রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘খুনের তদন্ত হচ্ছে। আর দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy