Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
উপনির্বাচন

ছাপ্পার নালিশ নিয়ে কমিশনে বিরোধীরা

আবহাওয়া ঠাণ্ডাই ছিল। তবে উপনির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহার। শনিবার সকাল থেকে ভোট শুরু হতেই একের পর এক অভিযোগ উঠতে শুরু করে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কোথাও পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়ার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৬ ০২:২৬
Share: Save:

আবহাওয়া ঠাণ্ডাই ছিল। তবে উপনির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহার। শনিবার সকাল থেকে ভোট শুরু হতেই একের পর এক অভিযোগ উঠতে শুরু করে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কোথাও পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়ার। কোথাও গ্রাম ঘিরে রেখে বিরোধীদের বুথের কাছে যেতে বাধা দেওয়ার। এমনকী বাম প্রার্থীকে পুলিশের সামনেই ভোটের পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগও ওঠে।

বেলা গড়াতেই পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ডিসিআরসির সামনে অবস্থানে বসে পড়েন বিজেপি প্রার্থী হেমচন্দ্র বর্মন ও দলের কর্মী সমর্থকরা। ১৪৪ ধারা ভাঙার অভিযোগে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিজেপি কর্মীদের হঠিয়ে দেয়। তাঁর কিছু পরেই বাম প্রার্থী নৃপেন রায় সেখানে গিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে ভোট বাতিলেরদাবি করেন।

কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “দুই দলের তরফ থেকে যা অভিযোগ করা হয়েছে তা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।” তৃণমূল অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমুলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বিরোধীরা বুঝতে পেরেছে কি হতে চলেছে। তাই আগে থেকেই কিছু মনগড়া অভিযোগ নিয়ে হইচই করছে। কোথাও কোনও সন্ত্রাস হয়নি। মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট দিয়েছেন।” একই দাবি করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দিনাহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। তিনি বলেন, “বহু জায়গায় ঘুরেছি। কোথাও বচসা পর্যন্ত হয়নি। তা সবাই জানে। কী কারণে বিরোধীরা এমন অভিযোগ করছে তা বুঝতে বাকি নেই কারও।”

দলীয় সূত্রের খবর, কোচবিহারে প্রচারের বহরেও শাসক দলের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে ছিল বিজেপি ও বাম। দুই দলের তরফেই অবশ্য প্রচারের শুরু থেকেই সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলা হয়। তার পরেও ভোটে ভাল ফলের দাবি করে দুই দল। এ দিন বেলা গড়াতেই অবশ্য সেই দাবি ফিকে হয়ে যায়। বিজেপি অভিযোগ করে, আধা সামরিক বাহিনীকে বসিয়ে রাখা হয়। গ্রামের দিকে রাজ্য পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ার্সকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁদের সামনেই মাথাভাঙা, দিনহাটা, সিতাই, শীতলখুচিতে একাধিক বুথে তাঁদের এজেন্টকে ভিতরে ঢুকতে দেয়নি তৃণমূলের নেতারা। ডাউয়াগুড়িতে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দাঁড়িয়ে থেকে ছাপ্পা ভোট করান বলে বিজেপির অভিযোগ। সাবেক ছিটমহল পোয়াতুর কুঠিতে ছাপ্পা ভোট দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। কয়েকটি বুথে ব্ল্যাক টিউব ও কাগজ দিয়ে বিজেপি প্রার্থীর নাম ও চিহ্ন ঢেকে দেওয়া হয়। কোথাও তাদের ক্যাম্প অফিস করতে দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ করে বিজেপি।

বিজেপি প্রার্থী হেমচন্দ্রবাবু বলেন, “দেড় হাজারের বেশি কেন্দ্রে বুথ এজেন্ট ছিল আমাদের, বেলা গড়াতেই গ্রামের কোনও বুথেই এজেন্টদের থাকতে দেওয়া হয়নি। পরে অবাধে ছাপ্পা দেওয়া হয়। আমরা লিখিত ভাবে তা নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছি।” বামেদের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, নাটাবাড়ির একটি বুথে তাঁদের নেতা শম্ভু চৌধুরী ও তাঁর মাকে ভোট দিতে দেয়নি তৃণমূল। দিনহাটা, সিতাই, শীতলখুচি, মাথাভাঙা, কোচবিহার দক্ষিণের বহু বুথে তাঁদের এজেন্ট বসতে দেওয়া হয়নি। টাকাগাছে প্রকাশ্যে তৃণমূল নেতা ভোটারদের হুমকি দেয়। বাম প্রার্থী নৃপেনবাবু বলেন, “ছাপ্পা ভোট চলছিল সিতাইয়ে। একজন ভাল মানুষকে অন্ধ বানিয়ে ভোট দেওয়ার চেষ্টা হয়। সেই সময় আমি প্রতিবাদ করি। আমাকেও দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় শাসক দলের নেতারা।” শাসক দলের প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায় অবশ্য সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Opponents By-election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE