Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ক্রান্তিতে দুই কিশোরীকে ধর্ষণ করে ফেলে দেওয়া হল ক্যানালের জলে!

শনিবার ভোরে ক্রান্তি ফাঁড়ি থেকে মাত্র ১ কিমি দূরে তিস্তা সেচ প্রকল্পের বাঁ হাতি ক্যানালে এই ঘটনার পরে ক্রান্তি বাজার এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

উৎসুক: এই খালেই ফেলা হয় দুই তরুণীকে। নিজস্ব চিত্র

উৎসুক: এই খালেই ফেলা হয় দুই তরুণীকে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্রান্তি শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫৪
Share: Save:

দুই কিশোরীকে ধর্ষণ করে ক্যানালের জলে ফেলে দেবার অভিযোগ উঠল মালবাজারের ক্রান্তিতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে ক্যানাল থেকে অসুস্থ অবস্থায় দুই কিশোরীকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। জলপাইগুড়ি হাসপাতালে তাদের প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাদের দেহে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তবে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেননি চিকিৎসকেরা। তাদের ফের শারীরিক পরীক্ষা হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।

শনিবার ভোরে ক্রান্তি ফাঁড়ি থেকে মাত্র ১ কিমি দূরে তিস্তা সেচ প্রকল্পের বাঁ হাতি ক্যানালে এই ঘটনার পরে ক্রান্তি বাজার এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। উদ্ধার দুই কিশোরীই স্থানীয় একটি স্কুলের দশম স্কুলের ছাত্রী। শনিবার দুপুরে ক্রান্তি ফাঁড়িতে এক ছাত্রীর বাবা স্থানীয় দুই যুবকের বিরুদ্ধে ওই দুই কিশোরীরে ধর্ষণ করে ফেলে দেবার অভিযোগ দায়ের করেন। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ডেন্ডুপ শেরপা বলেন, ‘‘অভিযোগের ব্যাপারে জেনেছি। অভিযুক্তরা যাতে দ্রুত ধরা পড়ে সে বিষয়ে দেখা হচ্ছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই কিশোরীর মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব রয়েছে। গত রবিবার একজনের বাবা-মা কলকাতায় চিকিৎসার জন্যে যাওয়ায় অন্য বান্ধবী তার বাড়িতে রাত্রিবাস করতে আসে। যে কিশোরী রাত্রিবাস করতে বান্ধবীর বাড়ি গিয়েছিল তার বাবাই ধর্ষণের অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি জানান, গভীর রাতে মেয়ের বান্ধবীর বাড়িতে স্থানীয় দুই যুবক জোর করে ঢুকে পড়ে। তারাই বাড়ি থেকে দুই কিশোরীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ক্যানালের ধারে জঙ্গলে ধর্ষণ করে ক্যানালের জলে দুই কিশোরীকে ফেলে পালিয়ে যায়। অভিযুক্ত দুই যুবক পলাতক। এক যুবকের ক্রান্তি লাগোয়া গঙ্গাদেবী এলাকাতে বাড়ি। সেখানেই সে বাইক, স্কুটার সারাই এর গ্যারাজে কাজ করত। অন্য যুবক ক্রান্তি বাজারে তেলেভাজার দোকান চালাত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। অভিযুক্ত দুই যুবকের দুটি মোবাইল ফোন মেয়েটির বাড়ির শোবার ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।

তবে তদন্তে বেশ কিছু প্রশ্ন সামনে এসেছে বলে দাবি পুলিশের। প্রথমত, যে কিশোরীর বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ, সেখানে তার বাবা মা না থাকলেও তার দাদা ছিল। দাদার উপস্থিতিতে কীভাবে দু’জন ঢুকে মেয়েদের তুলে নিয়ে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাছাড়া ওই বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিমি দূরে গণ্ডগোলটারির মত যথেষ্ট জনবহুল এলাকায় ক্যানালের কাছে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠলেও স্থানীয়রা কেন কেউই কিছু টের পাননি তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে। ক্রান্তি ফাঁড়ির ওসি খেসাং লামা জানান, অভিযোগ পেয়ে সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: অর্চনা খুনে নয়া মোড়: উদ্ধার আরও ১ বস্তাবন্দি দেহ, তিনিই কি সেই ঝাড়খণ্ডের প্রেমিক?

মালবাজার এলাকার সার্কেল ইনস্পেক্টর মিত্রা রাই জানান, জলপাইগুড়িতে কিশোরীদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তবে যে এলাকাতে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে নিত্যদিনই মদের আসর বসে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি করেন তৃণমূলের ক্রান্তির ব্লক সভাপতি শ্যামল বিশ্বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rape Complaint Girl Injury Canal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE