সংঘর্ষের পরে কলেজের সামনে ভিড়। ছবি: নিজস্ব চিত্র
শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানের জন্য সহপাঠীদের কাছে চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে বচসার জেরে টিএমসিপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে রক্ত ঝরলো কলেজ চত্বরে। শনিবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট আইন কলেজের ঘটনা।
ওই সংঘর্ষে উভয় গোষ্ঠীর ছ’জন জখম হন। এক ছাত্রের মাথা ফাটে। সকলকে বালুরঘাট হাসপাতালে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার জেরে কলেজের সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে বালুরঘাট থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বালুরঘাট থানার আইসি সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত কোনও পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।’’ কলেজে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ দিন কলেজের অধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন না। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানের জন্য আইন কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রেরা সহপাঠীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলতে থাকে। প্রহৃত প্রথম বর্ষের পড়ুয়া রেজাউল হকের অভিযোগ, ‘‘ফুর্তি করতে চাঁদা তোলা হচ্ছে বলে প্রথম বর্ষের কয়েকজন ছাত্র কটাক্ষ করলে তার প্রতিবাদ জানানো হয়।’’ তা নিয়ে দু’পক্ষের ঝগড়া থেকে শুরু হওয়া হাতাহাতি থামাতে উঁচু ক্লাসের ছাত্রেরা সামিল হলে তাঁদেরও গায়ে হাত তোলা হয় বলে অভিযোগ। এরপরই টিএমসিপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সিভিক পুলিশের উপস্থিতিতেই লাঠি নিয়ে দু’পক্ষ হামলা করে বলে অভিযোগ।
বালুরঘাট আইন কলেজে দীর্ঘদিন থেকে বিপ্লব মিত্র ও শঙ্কর চক্রবর্তীর অনুগামী ছাত্র সংগঠনের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল, মারপিট লেগেই রয়েছে বলে অভিযোগ। শঙ্কর চক্রবর্তী অনুগামী তৃণমূল নেতা তথা বালুরঘাট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটার সুভাষ চাকীর ছেলে ওই কলেজের ছাত্র। তাঁকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ অন্য গোষ্ঠীর ছাত্র নেতাদের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে রেষারেষি থেকে গণ্ডগোলের শুরু বলে অভিযোগ।
এ দিন চাঁদা তোলা নিয়ে একই শ্রেণির ছাত্রদের মধ্যে বিবাদে জেরে সংঘর্ষের ফলে বাইরের জেলা থেকে পড়তে আসা আইন কলেজের ছাত্রছাত্রীরা বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, কলেজে বহিরাগতদের প্রবেশের উপরে কর্তৃপক্ষের কোনও উদ্যোগ নেই। মাঝেমধ্যেই দু’পক্ষের গণ্ডগোলের জেরে পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে। এ দিন সপ্তম সেমেস্টার পরীক্ষার ফর্ম নিতে এসে গোলমালের জেরে অনেকেই ফিরে যেতে বাধ্য হন বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে।
আইন কলেজ পরিচালন সমিতির সদস্য তথা পিপি সুভাষ চাকীর দাবি, ‘‘কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে দীর্ঘ দিন আমাকে কোনও সভায় ডাকা হয় না।’’ এ দিন কলেজে কী হয়েছে, তা তাঁর ছেলে বা তিনি কেউই কিছু জানেন না বলে দাবি তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy