জোটের রফা অমান্য করে ভোটের ময়দানে নেমে পড়েছেন ফজলে হক। তাঁকে নিরস্ত করতে আসরে নেমেছেন কংগ্রেস নেতারা। দল সূত্রের খবর, বুধবার সকালে ফজলে হককে ফোন করে কথা বলেছেন সিতাইয়ের কংগ্রেস প্রার্থী তথা বিধায়ক কেশব রায়। তাঁকে ভোটে না লড়তে অনুরোধ করেছেন তিনি।
কিন্তু তাতেও বরফ গলেনি। দলের প্রতীক নিয়ে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ লড়াইয়ের ব্যাপারে হাল ছাড়তে রাজি নন বলে পাল্টা জানিয়ে দিয়েছেন ফজলেবাবু। এখনই ভোটে না লড়ার ব্যাপারেও কোন রকম আশ্বাস দিতেও রাজি হননি। এদিনও বিকেল থেকে বামনহাট, চৌধুরীহাট, কিসামত দশগ্রাম ও লাগোয়া এলাকায় প্রচার চালান তিনি।
কেশববাবু বলেন, “হক সাহেবের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। দলের প্রতীক না পেলে উনি নির্দল হয়ে লড়ুন, সেটা আমরা চাইছি না। উনি পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন।” কেশববাবুর বক্তব্য, ফজলে হক জোটের রফা অমান্য করলে, জেলার অন্য আসনেও তার প্রভাব পড়বে। ফজলে হক অবশ্য বলেন, “দিনহাটা আসনে আমি বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই চাইছি। এমন পরিস্থিতি অন্যত্রও রয়েছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ছাড়পত্র পাব বলে আশা করছি। সেটা না পেলে মানুষ যা চাইবেন, সেটা বুঝে সিদ্ধান্ত নেব বলে কেশবকে এদিন সাফ জানিয়েও দিয়েছি।”
এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো অস্বস্তিতে জেলা কংগ্রেস নেতারা। দলের একাংশের বক্তব্য, ফজলে হকের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করে জটিলতা কাটানো দরকার। অন্য অংশের অবশ্য বক্তব্য, ফজলে হক প্রবীণ নেতা। দুঁদে রাজনীতিবিদ। তাঁকে পরামর্শ দেওয়ার বদলে পুরো ঘটনা প্রদেশ ও এআইসিসি নেতৃত্বের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। কোচবিহারের জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেন, “আসন রফার বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যাপার। ফলে ওই ব্যাপারে কিছু বলব না। জেলায় জোটের প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে নামতে দলের কর্মীদের বলে দিয়েছি।’’
জোটের তরফে কোচবিহারের ৯টি বিধানসভাতেই আসন বণ্টন চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। ফরওয়ার্ড ব্লক ৪টি, সিপিএম ৩টি ও কংগ্রেস ২টি আসন পেয়েছে। কোচবিহার উত্তর, দক্ষিণ, সিতাই, দিনহাটা পেয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক। সিপিএম পেয়েছে নাটাবাড়ি, শীতলখুচি ও মাথাভাঙা। কংগ্রেসকে দেওয়া হয়েছে সিতাই ও তুফানগঞ্জ কেন্দ্র। তুফানগঞ্জ ছাড়া সব ক’টি আসনেই প্রার্থীদের নাম ইতিমধ্যে ঘোষিত হয়েছে। জোটের প্রার্থী হিসাবে দিনহাটায় ফরওয়ার্ড ব্লকের অক্ষয় ঠাকুরের প্রচারে কেশববাবু ইতিমধ্যে সামিল হয়েছেন। বুধবার কোচবিহারে জোটের তরফে প্রকাশ্য সভাও হয়। বাম ও কংগ্রেস নেতারা এক সুরে তৃণমূলকে উৎখাতের ডাক দেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে ফজলে হকের অনড় মনোভাব কংগ্রেস নেতাদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy